''এইটা তুই কী লিখেছিস, বলতো বাজান, বল্?
কবিতা নয়, এ যেন এক শব্দকলার ছল''!
আমার মা-য়ে হাইস্যা বলে, ''ছন্দ যে নাই কিছু,
কাব্যকথায় যাসরে বলে- 'কাঁঠাল বড় লিচু'!
কাব্য হলো- মানুষ-জীবন, জীবনবোধের কথা;
শব্দ-ছন্দে ভাবের ঘরে মানুষ-মানবতা।
যে কবিতা বুঝি না; তা' লিখিস না তুই বাপ,
ছাইপাশ তুই যা' লিখে যাস, কাব্যের অভিশাপ''।


বলি তাঁরে মৃদু স্বরে- ''শোনো, আমার মা!
এইটা হলো, বর্তমানের হালের কবিতা।
নাম দিয়েছি- 'আধুনিক' তার; তুমি বুঝবে না;
গহীন কথার ভাবনা নিয়ে লেখার রচনা।
ফিট-বাবুরা পড়বে মাগো এসব কবিতা,
গাজী-কালু-চম্পাবতীর পুঁথি নয় মা তা'।
এই কবিতা বুঝতে গেলে যুঝতে হবে, মা!
ছন্দকথার কাব্যরসের মিলন হবে না''।


হেসে বলেন মা-জননী- ''ওরে, ও বাজান!
যে কবিতায় নাই ইতিহাস, নাই জীবনের গান;
সে-ই কবিতা লিখিস না তুই, এ মিনতি করি-
মা বোঝে না যে কবিতা যাচ্ছিস ক্যান গড়ি'?
আগুনঝরা ফাগুন নিয়ে কবিতা তুই লিখ্,
বিখ্যাত সব কবির লেখা পড়ে আগে শিখ্।
দেশের কথা, দশের কথা, ভালোবাসার কথা,
জীবনযুদ্ধ কথার কাব্যে আন্ রে বিমলতা।
এ সব নিয়ে লেখ্ কবিতা, বলছি আমি বাবা,
তাইলে যে তুই আগামীতে মানুষ-মনে র'বা''।
এই হলো মা-র বাণী,
স্বপ্নে এসে বলে গেলেন কাব্যের রাজরানী।


১৫/১২/২০২৩
ঢাকা।