আমারও তো সাধ ছিল
দুজনে মিলে জ্যোৎস্না স্নানের ;
রক্তকরবীর লাল রঙে সেজে
হলুদ শাড়িতে তোমার হাতে হাত রেখে
বসন্তের বর্ষ বরণের ।
আমারও তো সাধ জাগে,
অফিস-ফেরত তোমার লবণাক্ত
শরীরের উষ্ণ আলিঙ্গনের ।
ঘেমে- তেঁতে তোমার পছন্দের
চিংড়ির মালাইকারী রাঁধার ।
সাধ জাগে, আমার এলোমেলো চুলে তোমার
আঙুলের স্পর্শের; সকল বাধা পেরিয়ে তোমায় আমার করে
পাবার গরবে গরবিনী সেজে
সুখের একটা সংসার বাঁধার ।
একসাথে হেঁটে যেতে টিএসসি, রমনার বটমূল
অথবা তোমার শ্যামল গ্রামের মেঠোপথে ।
খুব সাধ জাগে জানো , রাত কেটে যাক কথার ফুলঝুড়িতে ,
ঠিক যেমন ছিল আমাদের পরিচয়ের দিনগুলিতে ।
সাধ ছিল, দুজনের হাস্যজ্জ্বোল ছবি
ভেসে যাক লাইক কমেন্টে ;
লোকে ভাবুক, “এই আমার মত সুখী কে আছে
আর ত্রিভুবনে ?”
লোকে বলুক তোমায় শ্রেষ্ঠ দায়িত্বশীল স্বামী,
আমার মায়ের একমাত্র মেয়ে জামাই ।
খুব আশা ছিল-
আমার সকল অসুন্দরকে তুমি
বরণ করে নেবে দেবোপম ভালবাসায় ।
হোক না আমার রঙটা একটু চাপা,
চুলটা ঈষৎ পাতলা ।
তোমার চোখে আমিই না হয় এলিজাবেথ টেইলর ।
আমারও তো স্বপ্ন ছিল,
তুমিই হবে আমার সুপার হিরো ।
তাই তো তোমার সকল দীনতা, হীনমন্যতা, পশুত্ব,
লাম্পট্য আর কালিমাকে গ্রহণ করে,
ক্ষমা করেছিলাম ভালবাসার মহিমায় ।
জনম জনমের বন্ধন মনে করে সঁপেছিলাম
সবকিছু, আমার যা কিছু, অমূল্য রতন ।
এই বুঝি দিলে তার প্রতিদান ?
এত মেরেও মারার সাধ বুঝি গেল না ?
এত পেয়েও, কি আরও চাও ?
এত ভালবাসা পেয়েও তোমার
প্রেমের সাধ মেটে না ?
সুন্দর , সুন্দরতর , সুন্দরীতমা--
আর কত সু্ন্দর পেলে তোমার সুন্দরের আশ মিটবে ?
অথবা তোমার সীমাহীন চরিত্রহীনতার ?
তোমার আপনের চেয়ে ছিল যে আপন,
তারেই করলে ঘৃণিত বিতাড়ন !
জানে ঈশ্বর, জানে বিধাতা,
কি পাপ তুমি করেছ বরণ ।
কাঁচেদের করলে আপন হীরকেরে ছুঁড়ে ফেলে ?
ভাল থেকো, সুখে থেকো তাহাদের ভীড়ে ।
আমারও কিছু স্বপ্ন ছিল,
তুমি ভেঙে দিয়ে গেলে ।
আমারও কিছু সাধ ছিল,
তুমি ধ্বংস করে দিলে ,
তুমি হত্যা করলে
আমার আামাকে,
সংহার করলে আমার সংসারের
শেষ স্বপ্নটাকেও । । ।