যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে এই ইট- পাথরের দেয়াল,
মানুষগুলোর সব আবেগ বর্জিত বেখেয়াল।
আমি এই শহরে স্বপ্নচারী, হাতের মুঠোয় ভবিষ্যৎ
চেনা অচেনার ভিড়ে শহরের শাহরিক সেজে আছি বৃহৎ।

স্বপ্নগুলো মরতে মরতে নিঃশেষ হলো সব,
সংসার জীবন খেলে পাশা, ভুলে অতীত খেল তামাশা,
এই শহুরে জীবনে এসে ভুলি মেঠোপথ।
অচেনা স্বপ্নগুলো সম্বিৎ ফিরে ভীড় করে মনে।
টুকরো টুকরো ইচ্ছেগুলো অসহ্য যন্ত্রণা দেয়,
বড় বড় চাওয়া গুলো মুখ থুবরে পড়ে থাকে স্বপ্নের বেড়াজালে।

এই শহর আমার জন্য না
অভিশপ্ত, আমি বঞ্চিত, আমি তৃষ্ণার্ত, বড় ক্লান্ত আমি।
জীবনের তাগিদে মেকি বেসে চলছি নিরন্তর
এ পথ চলা যেন শেষ হবার নয়
জীবন ক্ষয়ে ক্ষয়ে ঘুন পোকার দখলে।
অভাগা এই শাহরিক কেবল স্বপ্ন আঁকে পূরণহীন স্বপ্নের মাঠে

কলম ধরতে গেলে চোখের পাতা ভিঁজে
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়, দাগ লাগে কলিজায়।
কলম ধরতে ভয় হয় ভীষণ।
কান্নাকে যদি কলমের ভাষায় আনা যেতো!
পাতার বুকে সমুদ্র ঢেউ খেলত তবে।

কেন জীবনে এমন?
যে জীবনের মানে বুঝে না, তার হাতে অবারিত সুযোগ, আর জীবনের জন্য যার কত আকুতি, তার প্লেটের শুকনো রুটি।
কত অদ্ভুত ভঙ্গিমায় জীবন চলে নিজস্ব গতিতে।
প্রান্তরে ভবঘুরে ঘুরে, এই ভব সংসারে আমিও ঘুরি পথ ভুলে।

আমার আল্লাহ জানে তার কাছে আমার কত অনুযোগ আকুতি।
আমার আল্লাহ জানে জীবনে ভারে কুঁজো হয়ে নেতিয়ে পড়া এক পান্থ অতিথি আমি।
আর্তনাদ গুলো ভদ্র সমাজের কাছে বলা বৃথা
সুযোগ নিতে চায় সবাই, এ ধরা মজা লুটেরার দখলে।

গলা ফাটা চিৎকারে আজ ছাঁতি ফাটে,
আল্লাহর মন ফুটে কিনা জানিনা।
হয়তো বেঁচে থাকতে হবে বলে ঘানি টানছে জীবনের, হয়তো স্বপ্ন গুলোর সাথে আমিও আত্মহুতি দেবো কোনদিন।

চক্ষুলজ্জা আমায় অভুক্ত রাখে,
বহু ক্রোশ পথ পদব্রজে নেয়,
ছেঁড়া কাপড়েও হাসায়,
স্বল্পেতুষ্টিতা শেখায়।

ভদ্র পল্লীতে নিত্য যাতায়াত আমার
সম্মানের নেশায় প্রপাগান্ডার দখলে আমি।
কেন এমন আমার? কেন?
কিসের শাস্তি পাইগো দয়াল?
কিসের সাজা দাও?
প্রয়োজন শেষে ছুড়ে মারে পৃথিবী,
সব মিছে সব ফাও।

মগড়া কুটির
নেত্রকোণা
১৮/১১/২০