হায়! পঁচিশ;
তোমার মাঝে কেন এত বিষ?
তোমায় প্রেতাত্মা না কি ভয়াল নামে ডাকব?
না কি রক্তের রঙে রঙ তুলিতে আঁকব?
একাত্তর-পঁচিশের নির্মম সে কালো-রাত,
ঘুমন্ত-নিরীহ মানুষ পেয়েছিল নিষ্ঠুর যে স্বাদ,
আবার তোমায় পেলাম, নয়-পঁচিশের দিন!
অশ্রুতেই নয় ক্ষান্ত, থামেনি সর্প রাণীর বীন।
গুণীজন হত্যায় যায় যদি দেশ রসাতলে,
জেল-হত্যায় পেছাল দেশ একশ' বছর; পঁচাত্তরে।
সূর্য-সন্তান নিল শপথ, জাগলো যবে সবার তরে,
একটি তাণ্ডবে পেছাল দেশ, ফের পাঁচশ' বছরে।
ভাষা-শহিদদের যদি না ভুলি কোনদিন—
একাত্তর-বীরদের যদি না শোধাতে পারি ঋণ,
বুদ্ধিজীবী, জেল-হত্যায় করে যদি দেশ ধ্বংসন,
সূর্যসন্তান হত্যায়ও নাশিত দেশ, রুষ্ট মায়ের মন!
যাদের চোখের বিষাক্ত তীর—
বিঁধে গেল, ছিন্ন করল সাহসী-শির,
তাদেরকেই আজ প্রণাম করি,
তাদের হাত ধরেই চলছি ধীর।
ক্ষমা করে দিও, হে বীর সন্তানেরা!
জানি, আর হবে না আপন দেশে ফেরা,
নিষ্পাপ মুখগুলো করবে না আর জেরা,
মমতাময়ীর মুখখানি হবে না আর হেরা।
ব্যথিত আমিও, হাসি নেই সুখের,
নয় মায়া সাতান্ন জনের, মায়া শত মুখের।
তনু ব্যথায় নই ব্যথিত, ব্যথায় ব্যথিত বুকের—
ব্যথায় বইছে জলধারা, অশ্রুজল নয়নে ঢের!
তবে, যদি না ভুলি মোরা লক্ষ শহিদ—
ভুলবো না তোমাদেরও, হবে না অতীত।
যে রক্তে বইছে নদী, রঞ্জিত ভূমি, অঙ্কিত ধরা,
সে রক্তেই আসবে বিজয়, তৈরি হবে মুক্তি-সরা।
ইতিহাস বলে কথা—
“যে তীরে ছেঁদিছ মোর বুক,
সে তীরেই পাবে তুমি ব্যথা।”