একমাত্র মাতাল হলেই
আমার তোমাকে তোমার পৃষ্ঠাগুলোকে খুলে
খুলে পড়তে ইচ্ছে করে।
মাতাল হলেই
পরম ঔৎসুক্য এসে জড়ো হয় চেতনায়।
মনে হয়-
দাঁড়ি কমা সেমি-কোলন এমনকি তোমার বিস্ময়
চিহ্নগুলোকেও পড়ে নেই শিক্ষার্থীর
অভিনিবেশে।
ইচ্ছে জাগে-
"মার্কার পেন" চালিয়ে দেই তোমার দ্রষ্টব্য
লাইনগুলোতে।
কেবল মদাক্রান্ত হলেই
আমি তোমার মধ্যে খুঁজতে থাকি চর্যাপদের ধ্রুপদী
শব্দবন্ধ ;
মেঘদূতের মহাকাব্যিক মগ্নতা।
মাতাল হলেই
আমার মনে হয়- তুমি নারী ; তোমার কাছে বাইন্ধা রাখি আমার ঘরবাড়ি।

কেবলমাত্র মাতাল হলেই
আমি হয়ে উঠি
পরম আস্তিক-প্রাণ ; ঈশ্বরকে দেখতে পাই
দৃষ্টির ক্ষেত্রফলে।
তন্নতন্ন করে খুঁজেও যে ঈশ্বরকে পাই না কোথাও এবং
প্রতিকারহীনতার জন্য শাপশাপাস্ত করি
হররোজ-
মাতাল হলেই সেই ঈশ্বরকে দেখি ভিড়ভাট্টায় দুলালের
টঙ ঘরে অলস চায়ের কাপে মুখরতা নিয়ে
হুল্লোড়ে মেতে উঠতে।
দেখি, গণিকালয়ের গলিতে কোঁচড় থেকে বের করা বিড়িতে
লম্বা টান দিয়ে
ক্লান্তিকে বেদম পুড়িয়ে দিতে ; ক্ষুধায়-কামে-ঘামে
জবজবে একাকার।
মাতাল হলেই-
আমার পার ভাঙার শব্দের মতো হুহু করে
কান্না পায়।
প্রেমে কান্না পায়,
বিরহে কান্না পায়,
মৃত্যুতে মন্দিরে এবং কিছু কিছু মৌনতায়ও
কান্না পায়।
আমারই মধ্যে জড়িয়ে প্যাঁচিয়ে প্রাগৈতিহাসিক আমাকে
শুয়ে থাকতে দেখে মরার বাড়ির মতো
কান্না পায় আমার।
কেবলমাত্র মাতাল হলেই- ঈশ্বরকে খুব
আপন আত্মীয় মনে হয় ; অবদমিত কামেরই মতো ভীষণ জেগে ওঠে ভালোবাসা।

এবং মাতাল হলেই তোমার শরীরে লিখতে ইচ্ছে করে একটি দীর্ঘ ঘর-পালানো কবিতা।


>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>১৭/০৮/১৫ খ্রিঃ।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>ঝালকাঠী।।