আমি বসেছিলাম টেবিলে।
সামনে সকালের নাস্তা।
তুমিও এসে বসলে ঠিক উল্টো দিকের
একটি চেয়ারে।
কিছু ফ্রেন্স-ফ্রাই আর কফি নিলে
একটা।
আমার প্লেটে তখন ডিম ভাজি আর মুগের
খিচুড়ি।
আমরা কেউ কাউকে চিনি না।
যেন দু'ইটি আলাদা গাড়ি
ফুয়েল ভরতে এসেছে সকালের এই রেস্টুরেন্টের টেবিলের ফিলিং স্টেশানে।
এক হাতে সেলফোন নিয়ে
ঢুঁ মারছিলে ভার্চুয়াল দুনিয়ায়।
এই সকাল বেলায় তোমার মসৃণ ধবধবে আঙ্গুলগুলোকে
আমার কিছু প্রতীক্ষিত শব্দবন্ধ বলে মনে হলো ;
যে শব্দাবলীর জন্য একজন কবি অন্তহীন অপেক্ষা করে চেতনার
বন্দরে।
হাতের পাতলা অথচ তাৎপর্যপূর্ণ
মেয়েলি লোমগুলোকে মনে হল এক একটা যতিচিহ্ন।
যখন ফ্রাইয়ের লম্বা আলুর
টুকরোগুলোকে দু'আঙুলে ধরে মুখে তুলছিলে তখন তোমার
ঠোঁট দু'টিকে মনে হয়েছিল তুমুল সংশয়পূর্ণ
উৎপ্রেক্ষা।
নিতান্ত সাদামাটা কয়টি চুড়ির শব্দকে আমার মনে হয়েছিল দুর্দান্ত
অন্ত্যমিল।
হাত দিয়ে যখন
ঝুলে পড়া বাতাসের মতো শৈল্পিক চুলগুলোকে
সরাচ্ছিলে বারবার- ভাবলাম ক্লাসিক উপমারা জুড়ে বসেছে কবিতার
শরীরে।
তোমার পলি জমা উর্বর বুকের ঝলসানো স্ফীতিকে মনে হয়েছিল উৎকৃষ্টতম ছেকানুপ্রাস।
একসময় খাবার শেষ করে
ছন্দের মতো ব্যাকরণসম্মত পায়ে তুমি উঠে চলে
গেলে।
আমার দিকে তাকাওনি পর্যন্ত।
তোমার হেঁটে যাওয়ার চিত্রকল্পটির দিকে তাকিয়ে আমার
মনে হল-
একটি তুখোড় উত্তরাধুনিক কবিতা
আমার কবিতার খেরো খাতা ছেড়ে সটান হেঁটে যাচ্ছে কাকবান্ধব নগরের দিকে।
আফসোস ; তুমি জানলে না,
তুমি নির্বিকার উঠে গেলে এক কবির সামনা থেকে !
যদি জানতে তবে তোমার শরীর হয়ে উঠতে পারতো একটা গোটা কাব্যসমগ্র !
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>১৩/০৮/১৫ খ্রিঃ।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>ঝালকাঠী।।