আমি আসছি ; বিধুমুখী
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
এই মৃত্যুর
উপত্যকায় আমি বড় বেমানান-
থুত্থুরে বটগাছের মতো নিঃসঙ্গ-একঘরে
আমার
সব নৈবেদ্য গেছে শকুনিরা খেয়ে  
পারমাণবিক প্রেম
সভ্যতাকে নিয়ে গেছে উজবুকের মতো
উল্টোপথে-
মাৎসন্যায়ের যুগে
মানবতা এখানে মানবতা নয় ; শক্তের
কারবার
মৃত্যু মৃত্য নয় ; বর্বর ক্রুসেড
গুটিকয় জোটবদ্ধ
হায়েনা পৃথিবীটাকে খুবলে খুবলে করেছে
ছিন্ন-ভিন্ন
এই আতালের দুর্গন্ধময় তথাকথিত বিশ্বে
তাল-পুকুরের মতো
আমি নিভৃতচারী- বিষণ্ণ
আমার সবক'টা দিঘির জল চৈত্রের খরায়
গেছে পুড়ে  
আমার গুচ্ছ গুচ্ছ প্রেমের পদ্ম
শুয়োরেরা গেছে দলে
এই পাললিক বাংলায় অচেনা মুখ ;
মুখ নয় - মুখোশ
মানুষগুলো মানুষ নয় ; রক্ত-মাংস
আর এই গাঙ্গেয় দেশটা দেশ নয় ; বিধবার সিঁথির সিঁদুর

এইসব
জীবাণু-বোমায় আসন্ন মৃত্যুমুখী
ধরণী  
এইসব খন্ড-বিখন্ডিত পোড়া-দেশ মাড়িয়ে
অবাক জোছনার
মতো নমনীয় পায়ে হেঁটে আমি আসছি বিধুমুখী -
নারী আমার
কৈবর্ত নৌকোর মতো চেরাগ
জ্বালিয়ে
মিনমিনে সন্ধ্যায় আমি আসছি তোমার ঝুপড়িতে
সুগন্ধা আর
ধানসিঁড়ির মিলিত মোহনা ধরে
সদ্যজাত বাছুরের অস্থির পায়ে বিষখালীর
শুশুকের লাজুক ডুব-সাঁতারে
বিপন্ন প্রাণে
আমি আসছি বিধুমুখী
তোমার চাল-ধোয়া হাতের জলগন্ধি রমণীয়
শুভ্রতার কাছে
গুবরে শালিকের মতো শান্তি খুঁজে খুঁজে
ক্লান্ত ঠোঁটে
আমি আসছি তোমার বিছানায়- একটি চন্দ্রাহত
প্রশান্তির জীবনের জন্য

আর
আমি কার্তিকের কৃষকের মতো নির্ঘাত জানি -
যে প্রেম
খুঁজে খুঁজে পায়নি কেউ
কাতর গৃহিণীর জলপথে হারানো হাঁসের মতো
আমিও খুঁজেছি সন্ধ্যায় ; তোমার-ই বুকের ওমে বেঁচে আছে আজও।

১৭/১১/২০১৪
(ঝালকাঠী)