যখন তুমি অবসরে থাকতে,
কোন এক ছলে কথা বলতে চাইতে।
যখন আমি বলতাম,
‘আজ তুমি লাল টুকটুকে শাড়ী পড়ে আমার কাছে আসবে’,
তুমি আসতে না, আমি পথ চেয়ে থাকতাম।
কারন- তোমায় ভালোবাসি।
তোমার মনে পড়ে সেদিনের কথা-
দু’জনে গাঁয়ের ঝিল পাড় দিয়ে হেঁটে স্কুলে যেতাম।
তুমি বলতে, ‘জলে ভাসা এক শাপলা এনে দিতে’,
সেদিনও কোন পিছু না ভেবে অনেকটা নোংরা
জলের মাঝ থেকেও ফুল এনে দিয়েছিলাম।
তুমি মুচকি হেসে, আনমনে চলে গিয়েছিলে,
আমি অভিমান করিনি,
কারন- তোমায় ভালোবাসি।
যেদিন তুমি উত্তর পাড়ার দত্ত¡ বাড়ির
আম বাগানে রাজনকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলে-
‘আমি তোমায় ভালোবাসি’,
বৈশাখি হাওয়ায় আ¤্র মকুলের গন্ধের সাথে,
তোমার কথাগুলি কাটার মতো বিঁধছিল আমার কানে।
সেদিনের হৃদয় ভাঙ্গার মুহুর্তটাও সয়েছি আর অশ্রæ ঝরেছি,
কারন- তোমায় ভালোবাসি।
তোমার অহেতুক, মিথ্যা ভালোবাসার অভিনয়ে
আমার হৃদয়ের অন্দর মহলে অগ্নি জ্বলে ভস্ম হয়ে গেছে।
তুমি কি ভেবেছিলে, তোমার চেতনা অঙ্গ আর আমার চেতনা দন্ডের
এক নোংরা মিশ্রনই প্রেম আর ভালোবাসা ?
তা আমি সহ্য করে তোমাকে মুক্তি দিয়েছি।
কারন- তোমায় ভালোবাসি।
১০ বছর পরে-
কোন এক চৈত্রের ভর দুপুরে ঘর্মাক্ত শরীর নিয়ে
বিশ্রামের আশায় খালের পাড়ে বড় আমগাছের নিচে বসে আছি,
হঠাৎ এক মধ্যবয়সী বিধবা নারী সাথে এক ৭ বছরের ফুটফুটে মেয়ে,
তুমি চিনতে পারনি।
আমার সাদা বাবরি চুল, দাঁড়ি, মুচ লম্বা,
তবুও তোমায় চিনতে ভুল করিনি,
কারন-তোমায় ভালোবাসি।
বুঝেছি সেই তুমি!
একটু এগিয়ে আমায় জিজ্ঞেস করলে-
চন্দনপুর যাব, সরকার বাড়ি,
তখনও অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম
হঠাৎ তুমি চিৎকার করে উঠলে,
আ:..কি কামড় দিল।
নিচে তাকিয়ে দেখি দাঁড়িয়ে আছ লাল পিঁপড়ের লাইনে,
আমি হাত দিয়ে ছাড়িয়ে দিলাম
তুমি তখন, সেদিন বুঝতে পারলে
কারন- তোমায় ভালোবাসি।