কমলা ভাসিন

জাহিদ হোসেন রনজু
--------------------------------------®

কমলা ভাসিন,
তোমার মুখটি ভাসে
জ্যোৎস্না থৈ থৈ চাঁদে,
তিমির বিদারী পূর্ণিমা রাতে,
তারায় তারায় খচিত অসীম আকাশের নীড়ে।

কমলা ভাসিন- তোমার বোধে
তোমার বিশ্বাসে
শিকল ভাঙার সুর আছে
যে অবিরাম ঝড় তুলে
কূপমণ্ডূক মননের অন্ধকার বনে।

কমলা ভাসিন,
ভরায় প্রাণ
তোমার বলা কথামালা নির্ঝরের মতন
কঠিন পাথরের বুক চিরে কলকল ধ্বনি তুলে ছোটে।
অবিরত বিলায় সুবাস।

কমলা ভাসিন,
তোমার প্রেরণায় বাজে, উঠে
শৃঙ্খলিত পায়ে দ্রোহের ঝংকার
প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয় আরো কিছু পা।
তোমায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে
একটু একটু করে প্রতিদিন
তৈরি হয় নতুন এক-একটি সাহসের বাগান।

কমলা ভাসিন,
স্নিগ্ধ, সৌম্য আটপৌরে অবয়বের গভীরে
ক্ষোভ নয়, ঘৃণা নয় বহ্নি শিখা জ্বলে সূর্যের মতন।
কমলা ভাসিন - যে জন
নির্মোহ দ্রোহে
ভয়হীন, দ্বিধাহীন উচ্চারণ-
ভালবাসা নাও, ভালবাসা দাও সমান সমান।

যতদিন পৃথিবী, চিরঞ্জীব তুমি ততদিন
মানবতার অমর কাব্য,
অজর, অক্ষয় তুমি কমলা ভাসিন।

----------------------------------------
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ইসলাম নগর, খুলনা।

(কমলা ভাসিন, জন্ম ২৪ এপ্রিল ১৯৪৬ - মৃত্যু ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১,  ছিলেন একজন উন্নয়নশীল নারীবাদী কর্মী, কবি, লেখক এবং সমাজ বিজ্ঞানী। ভাসিনের কাজ, যা ১৯৭০ সালে শুরু হয়েছিল, লিঙ্গ, শিক্ষা, মানব উন্নয়ন এবং গণমাধ্যমকে কেন্দ্র করে।
তিনি ভারতের নয়াদিল্লিতে থাকতেন।
তিনি সঙ্গত -এ ফেমিনিস্ট নেটওয়ার্কের সঙ্গে তার কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত এবং তার কবিতা Kyunki main ladki hoon, mujhe padhna hai.
১৯৯৫ সালে তিনি একটি সম্মেলনে জনপ্রিয় কবিতা আজাদি (স্বাধীনতা) এর একটি পুনর্নির্মাণ, নারীবাদী সংস্করণ আবৃত্তি করেছিলেন।
তিনি ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং -এর দক্ষিণ এশিয়া সমন্বয়কারীও।

তিনি নারীবাদী তত্ত্ব এবং কমিউনিটি অ্যাকশনের সংমিশ্রণকারী এক ধরনের তত্ত্বে বিশ্বাস করতেন।
তিনি সর্বদা বিশ্বাস করতেন যে, কার্যকর পরিবর্তন আনার জন্য, স্লোগানকে অবশ্যই সম্প্রদায়ের বা সমাজের সংঘবদ্ধতার সাথে থাকতে হবে।)