কাজের মাসি

জাহিদ হোসেন রনজু
-----------------------------------------®

কাজের মাসি কিংবা বুয়া, নামটি আমার রহিমা,
করোনাতেই বুঝতে পেলাম মানব মনের মহিমা।

কত বাসায় কাজ করেছি হাড়-মাংস সব জল করে,
কাজ করেছি প্রয়োজনে দুপুর রাত্রি খুব ভোরে।

খেটে গেছি সবার জন্য গাধার খাটনি ফি বছর,
এখন দেখি কেউ রাখে না আমার কোন খোঁজ-খবর।

সব মানুষই বলে দিছে-'আসিস নারে এখন আর,
ডাকবো তোকে কাজের জন্য যখন হবে যে দরকার।'

দশ বাড়িতে কর্ম করে পেতাম আমি যে টাকা,
সেই টাকাতেই চলতো আমার কষ্টেসৃষ্টে বেঁচে থাকা।

ভাবলো নাতো সেই কথাটি- যদি আমি না পাই  কাজ,
ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমি কেমন করে চলবো আজ।

সবাই বলে- 'আসিস নারে, কাজের বুয়া চাহি না,'
বললো না কেউ আসিস নিতে মাসের শেষে মাহিনা।

আচ্ছা বলো তারাও কিন্তু যায় না অফিস চত্বরে,
কিন্তু তারা ঠিকই পাবে বেতনটা ফুসমন্তরে।

কাজ না করেও তারাও যদি নিতে পারে বেতন সব,
আমার বেলায় এমন কেন নীতি, বিবেক আজ নীরব?

আমিও তো ইচ্ছে করে দিচ্ছি নাতো কাজ ফাঁকি
করতে বরং চাচ্ছি কাজই মৃত্যু ভয় পিছে রাখি।

তবু তারা আমার প্রতি করছে কেন অবিচার
দিচ্ছে নাকো হক পাওনা, নিচ্ছে নাকো খোঁজ আমার।

করোনাকে ভয় পেয়ে আজ ডাকছে সবাই স্রস্টাকে,
লাভ কী হবে ডাকলে শত ছুঁড়ে ফেলে বান্দাকে?

এই রহিমা, কাজের মাসির মতন আছে হাজার জন,
তাড়ায় দিয়ে চাচ্ছো মুক্তি, মানুষ তোমার কেমন মন?

--------------------------------------------
১৭ এপ্রিল ২০২০, মিরপুর, ঢাকা