বিভ্রান্ত সময় ; বিধ্বস্ত যুবক
জাহিদ হোসেন রনজু
------------------------------------®
'হৃদি তুমি এটা করতে পারো না,
না পারো না।
এভাবে তুমি আমার জীবনটাকে, আমাকে
তছনছ করতে পারো না।'
উসকোখুশকো ঘন কালো চুল-
বোতাম খোলা অবিন্যস্ত টি-শার্ট
চটি পায়ে ট্রাউজার পড়া
বাইশ-তেইশ বছরের এক বিধ্বস্ত যুবক
শত চোখের উৎসুক দৃষ্টি,
শত বিদ্রূপ কটূক্তি,
হাজার যানবাহনের আসা-যাওয়া
তারই মাঝে
ভ্রুক্ষেপহীন এক বিপর্যস্ত যুবক
কানে বাম হাতে ধরা মোবাইল
বার বার সংযোগ কেটে যাওয়া
আবার কল; ক্রুদ্ধ আক্ষেপ - 'কেটে দিচ্ছো কেন?'
সরু রাস্তায় অস্থির দুটি পা
এলোমেলো পদক্ষেপ
উদ্ভ্রান্ত আসা-যাওয়া এক যুবক
চোখে জল
নাক দিয়ে ফুঁপানোর শব্দ
সুঠাম দেহের মেদহীন পেটের ঘনঘন উঠানামা
আর
মুখ নিসৃত বারংবার একই শব্দ সমষ্টি
কখনো উচ্চস্বরে কখনো ক্লান্ত ধরা গলায়-
'না এ হতে পারে না,
এটা করতে পারো না হৃদি'।- ক্ষতবিক্ষত এক যুবক।
-'বাপধনের মাথাটা গেছে"
-"হা..হা....হা বাপজান ছ্যাকা খাইছে।'
এক রিক্সাওয়ালার মন্তব্য
আর
আরেকজনের উচ্চ হাস্যরসাত্মক উক্তি।
-'ছেলেটা তো খুব ভাল। ডাক্তারি পড়ে।'
-'কামাল সাহেবের মেজ ছেলে'।
-'চিনি তো। নামায পড়ে নিয়মিত।
কালকেরও দেখা হলো মসজিদে।'
- 'ভাল না ছাই। ভাল হলে হৃদি আসলো কোথা
থেকে?'
ভাল হলে এখন আর
হৃদি থাকতে নেই, ভালবাসা থাকতে নেই।
হৃদি বা হৃদিকা বা হৃদয়দের হৃদয়ে এখন আর ভালবাসা নেই।
আছে রোমাঞ্চ, রোমান্টিক সময়।
পাতা পড়া হলে পরে ছিঁড়ে ফেলো
নতুন পাতায় নতুন রোমাঞ্চ লিখো।
হে যুবক,
ভালবাসা যখন রোমাঞ্চ, ক্ষণিকের বিনোদন
সেই সময়- এই নষ্ট সময়ে
তুমি কেন বিভ্রান্ত হলে, ভালবাসতে গেলে।
---------------------------------------
২৬.১২.২০১৮, মিরপুর, ঢাকা।