উনচল্লিশের পথ ছুঁই ছুঁই চলেছে বয়সের গাড়ি-
ব্যবসা-বাণিজ্যে সফলতায় গড়েছি আধুনিক বাড়ি,
আরাম-আয়েশ আর আভিজাত্যে গ্রামে নাম করা-
বদান্যতায় হাতেমতায়ী সুখ্যাতি মিলেছে জোড়া।
মা-ছেলের সংসারটা তাই যাচ্ছে যেন বেশ-
তবুও কেন রাত দুপুরে মনেতে লাগে ক্লেশ।
এই কথাটা মায়ের কাছে যায়না তো আর বলা-
আলোচনা তাই বন্ধুদের নিয়ে, নিত্য যাদের সাথে চলা।
ওদের কারও ছেলে মক্তবে যায়, কারও মেয়ে হাফেজা-
এক বন্ধু বলেই বসে ‘তবে বন্ধু তোমার জন্য লাগে পাত্রী খোঁজা’।

ব্যাপারটা তো আমিও বুঝি কিন্তু বাঁধা কারিকারি-
চেহারাটা মোর বাচ্চার মতো, অল্প কিছু দাড়ি।
বন্ধুরা যখন করল বিয়ে, আমিও দেখেছিলাম পাত্রী-
ঐ মেয়েটিও বাচ্চা বলেছে যে হবার যোগ্য ছাত্রী।
লজ্জা পেয়ে শপথ করি হোক কিছুটা বয়স তবে-
বিয়ের সাদীর কাজটা তখন খুব সহজে হবে।

আজ বুঝি তার সময় হয়েছে, দেখতে হয় ফের মেয়ে-
খুঁজে দেখি পাইকি ‘যে রাজী করতে আমায় বিয়ে’।
এক বন্ধু খবর দিল ‘মহিলা মাদ্রাসায় পড়ান নাকি তিনি-
পঁচিশ তিরিশ হবে বয়স, মার্জিত আর খুবই মেধাবিনী’।

একদিন তাই মাকে নিয়ে গেলাম তারই বাড়ি-
খুব সুন্দর গোছ-গোছানো, রুচিবোধ চিত্ত নিলো কারি।
চেহারায় যেন নূর ঝরছে, লাজুক মুখের হাসি-
আমার মত পাত্র পেয়ে হয়ত অনেক হয়েছে খুশী।

দু’দিন পড়ে খবর এল হতে কনে বাড়ি-
পাত্র তার পছন্দ নয়, মুখে অল্প দাড়ি।
শুনে আমি মূর্ছা গেলাম, হল একি শেষে-
বউকি আমার জুটবে না আর অল্প দাঁড়ির দোষে।

মনের দুঃখে হলাম কবি, হাতে নিলাম কলম-
পাঠিকাদের কেউ আসে যদি দিতে ঘায়ে মলম।
শাড়ি আছে, গাড়ি আছে, আছে আধুনিক বাড়ি-
এসো যদি মানতে পারো মুখে অল্প কিছু দাড়ি।




সস্তাপুর, নারায়ণগঞ্জ।
২৮ মে, ২০১৪ ঈসায়ী।