দুগ্ধপোষ্য বাচ্চাটি ককিয়ে উঠতেই
বোঝে মা পেয়েছে সন্তানের ক্ষুধা,
বুকে নেয় জড়িয়ে দিতে সুধা পান
ধুম্রজালের জীবন মুক্ত শিশু আজও
জানে না ‘কাকে বলে ধূমপান’
তবুও যদি করি প্রশ্ন, উত্তরে ওয়ানা ওয়ানা-
যেন বলছে ‘আমরা শিশু, ধূমপান করি না’।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফটকে ঢুকতেই
শোনা গেল পড়ার-মারার আর্তনাদ
এর কলমের খোঁচায় ওর জামা রঙিন
এর ঘুষিতে ওর নাকটি বরবাদ।
যেন শিক্ষার পাশাপাশি চলছে মার্শাল আর্ট
তবুও একজনকে ডেকে বলি ‘করতো মনা?’
নম্র অথবা সন্দেহের সুরে দৃঢ় উত্তর
‘আমরা ছোট, ধূমপান করি না’।
উচ্চ, মহা আর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ যায় বখে
কেউ বলে চিন্তা দূর কেউবা টানে সখে,
অন্যদের কি নেই চিন্তা, নেই কি তাদের সখ?
শুনে তাকাল মিনমিনিয়ে, কেউবা রাঙাল চক্ষু খানা;
‘মনে তো চায়, জানি তবু ভালো নয়
সচেতন আছি তাই ধূমপান করি না’
কর্মজীবী বাবা, গৃহরক্ষিণী মা আর
সোনার সংসার, হেসেখেলে পরিবার,
একটু করি যাচাই, ধূমপানে কেন আপনাদের মানা?
গিন্নী বলেন ‘এ কেমন কথা! আমি বাঙালি নারী-
লজ্জা ভুলিয়া, কি করিয়া ধূমপান করিতে পারি’।
কি করি অপ্রস্তুত, লজ্জায় তো মাথা যায়-
খুজি, কর্মজীবী সাহেব তবে আছে কি বাসায়?
ওনার আছে কি’না অভ্যাস হলনা জানা।
মৃদু দুই কেশে, ভদ্রলোক হেসে
বলেন ‘ভাই বাঁধা তো কিছু নাই
এরা আমার বাগানের ফুল, ক্ষতি কি করে এর চাই
নিজে যদি খাই তিন এদের এক হবে খাওয়া
স্বাধীন বলে নয়, একজন বাবা বলে তাই ধূমপান করি না’।
***** ***** ***** *****
বলেছিলাম নিবো তামাক কোম্পানির চাকরীটা
কিন্তু সচেতন একজনও পেলাম না ধূমপায়ী-
একান্তে নিজেরও আছে একটু ভাববার বাকী
তামাকের গন্ধটাও আজও অপরিচিতই গেছে থাকি
কি করে সেই তামাকের হয়ে করব ডাকাডাকি।
কর্মজীবী ঐ বাবার মতই তো আমারও চাওয়াগুলো
ধূমপান মুক্ত থাকাই স্বস্তি, নির্মল স্বাধীনতা।
শুধু নিজেকে বাঁচাতে নয়, দূষণ করে তাই ধরি না,
হে সচেতন দেশের মানুষ চল সমস্বরে বলি
‘আমরা সুস্থ, সুস্থ বিবেক তাই ধূমপান করি না’।
সস্তাপুর, নারায়ণগঞ্জ।
২৮ এপ্রিল, ২০১৪ ঈসায়ী।