প্রধান কাজির দরবারে
কাঠগড়ায় দুই নারী দন্ডায়মান।
এক নারী শিশু নিয়ে কোলে
কাঁদতে কাঁদতে বলে
হুজুর আপনি ন্যায়ের ধারক
আপনি কঠিন বিচারক
আপনি মেহেরবান।
এই কোলের শিশু
আমার পরানের পরান।
আসল মা যে নয়
কেড়ে নিতে চায়
আমার কোলের সন্তান।
আপনি সততার প্রতিক
করুন ন্যায়ত প্রতিকার বিধান।
,
আচল ভিজিয়ে অশ্র জলে
অপর নারী বলে
আমি জানি, এই দরবারে নেই
ভুল বিচারের এতটুকু স্থান।
আমি কসম খেয়ে বলছি হুজুর
শিশুটি আমার
সে আমারই গর্ভের সন্তান।
কাজী সাহেব সবই শোনেন
মনে মনে প্রমাদ গুনেন
নেই সাক্ষী, নেই প্রমাণ
দুধের শিশু জানে না কথা
কিভাবে বুঝবে ও কার সন্তান?
কাজী সাহেব ভেবে নিলেন
তারপর রায় দিলেন
সত্য বলছো তোমরা দুজন
দাবি তোমাদের ঠিক সমান সমান।
শিশুকে তাই দুই খন্ড করে
বুঝিয়ে দাও যার যার সন্তান।
ন্যায্য রায় দিতে কুণ্ঠা কিসে!
জল্লাদ ডেকে নিয়ে এসে
পালন করো বিচারের ফরমান।
সব কানাকানি গুঞ্জন থামিয়ে
একজন আদালত কাঁপিয়ে
কেঁদে ওঠে হাউমাউ।
হে যোগ্য বিচারক আপনি মহান
আমার দোষে নেবেন না
দয়া করে নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ।
মিথ্যা বলেছি আমি
শিশুটি ঐ মায়েরই আসল সন্তান।
বলবো না কিছু
বেচে থাক শিশু
এটুকুই আমার আহবান।
কাজী সাহেব এবার মুচকি হেসে
বলেন দরবারে, শোন সবে খুলে কান
মায়ের ভালবাসায়
হয় না কোনদিন নকলের স্থান।
আসল মা চাইতে পারে না
নিজের সন্তানের এমন অকল্যান
সন্দেহ কি আছে
এই শিশু আসলে কার সন্তান?