ছয় ঋতু
গ্রীষ্ম
গ্রীষ্মের দাবদাহে প্রাণ ত্রাহি ত্রাহি
কোথা নাই মেঘ দল জল পরিবাহী।
মাঠে মাঠে জেগে ওঠে ফসলের চারা
সেচ দিতে কৃষকের রাত হয় সারা।
জল ছাড়া এই প্রাণ বুঝি বাঁচে না।
দিকে দিকে চলে তাই বর্ষার প্রার্থনা।।
বর্ষা
বাদলের ধারাপাত বর্ষায় শুরু
বিজলী চমকিয়ে মেঘ ডাকে গুরু গুরু।
চারিদিকে মাঠ-ঘাট জল থৈ থৈ।
নদী আর খাল-বিলে বাণ আসে ঐ।
ডুবে যাবে এই বুঝি ঘর-বাড়ী খামার
এবার প্রার্থনা শুরু বৃষ্টি থামার।
শরৎ
কাশ ফুলে ছেয়ে যায় ধু ধু বালুচর
বালিহাঁস উড়ে চলে নদীর উপর।
ঘন নীল আকাশে সাদা মেঘ ভাসে
উদাসী হাওয়া যেন ঘুরে চারপাশে।
শরতের রূপ দেখে চোখ ভরে যায়
বাউলের মত মন সুদূরে হারায়।।
হেমন্ত
গ্রামের পথ ধরে নুতন শস্যের ঘ্রাণ
ঘরে ঘরে বাঙালীর ভরে দেয় প্রাণ।
ক্ষেত জুড়ে হলুদ সবুজ সোনালী্র ঢেউ
এমন দৃশ্য কোন দেশে দেখেছে কি কেউ?
বাংলার মাটি ও মানুষ প্রাণ-চঞ্চল
এই বার তুলি মোরা শ্রমের ফসল।।
শীত
শীত এলে ঝরে যায় গাছের পাতা
সকালে বিকেলে নামে কুয়াশার ছাতা।
হাড়-হিম ঠাণ্ডায় থাকা জড়ো-সড়ো
শীর্ণ দেখায় নদ-নদী যত ছোট-বড়।
হিম শীত কেড়ে নেয় জীবনের গতি
কাজ ছেড়ে ঝোঁক বাড়ে আবেগের প্রতি।
বসন্ত
নতুন পাতার অলংকারে নিসর্গের সাজ
এসে যায় বসন্ত সে তো ঋতু-রাজ।
শিমুল-পলাশ দিয়ে লাল রঙে রাঙা
ফুলের রূপ দেখে দুঃখী মনও চাঙা।
বসন্তে ফুল ফোটে পাখি গান গায়
জীবন বেড়ে ওঠে নুতন আশায়।