না বুঝিয়া চাঁদের পানে যে হাত বাড়ায়
তাহাকে লোকে 'বামন' বলে।
সেই বামনের সখ হইলো
সাহিত্য পানে যাত্রা করিবার।
সাহিত্যের আকাশে আতশ বাজির মত
কাব্য ঝরিয়া পড়ে
তারকার মত কত নক্ষত্র আলো
দিয়া যায়। মেঘ মল্লারে ভেসে বেড়ায়
নান্দনিক গল্পের সমাহার।
সেই সব শুনিয়া বামন
আর ঘরে থাকিতে পারিলো না।
ছেঁড়া কাঁথার স্বপ্ন ভাঁজ করিয়া
তল্পি তল্পা লইয়া পথে নামিলো।

প্রথমেই সে হোঁচট খাইলো।
এক অশীতিপর বৃদ্ধ কহিলো
বাছা শুনিলাম, চলিয়াছো
সাহিত্যের পথে,
মুলধন তোমার কি বা আছে?
বামন তাহার তালি মারা কাপড়ের
ব্যাগ হইতে ক' খানা
শিক্ষা সার্টিফিকেট বাহির করিলো
সাথে পাঠ্য বইয়ের তালিকা।
বৃদ্ধ সেই সব দেখিয়া
ফোকলা দাঁতে হাসিতে হাসিতে
মাটিতে গড়াগড়ি খাইতে লাগিলো।
অপ্রস্তুত বামন কহিলো
কত লোক এই সব দেখিয়াই
আমাকে সালাম দিয়া যায়
আর তুমি উপহাস করিতেছ?
কোনমতে হাসি থামাইয়া
বৃদ্ধ কহিলো সাহিত্যে যাইবা?
সেই অন্তর্ভেদী দৃষ্টি আছে?
যাহা দিয়ে মানুষের ভিতর পর্যন্ত
দেখিয়া ফেলা যায়।
সেই দিব্য জ্ঞান লইয়াছো সাথে?
যাহার প্রদিপ সম আলো দিয়া
মানুষের কুসংস্কার অন্ধকারে
চারদিক আলোকিত করিবে।

বামনের ক্ষুদ্র মস্তিস্কে
এই প্রশ্নের মর্মার্থ কিছুই
প্রবেশ করিলো না
সে ফ্যাল ফ্যাল করিয়া চাহিয়া রহিলো
সাহিত্যের দিগন্ত বিস্তারী অকুল প্রান্তরে
নি:সীম পথের দিকে।
তাহার চোখ দুটি ছল ছল
করিয়া উঠিলো।