ইচ্ছে করে নীল গগনের রাজা হতে,
ইচ্ছে করে হারিয়ে যাই তেপান্তরের পথে।
ইচ্ছে করে পাখির মত গগন জুড়ে উড়ি,
পরক্ষণে শখ জাগে আরেক, তাই ইচ্ছে ছাড়ি।
ইচ্ছে করে পিছে ছুটে বেড়াই বন-বনান্তের পাখিদের,
ইচ্ছে করে খাঁচা থেকে মুক্ত করি তাদের।
ইচ্ছে করে ছোট হতে ফের একেবারে,
যখন তখন এই মন যা ইচ্ছা করতে পারে।
ইচ্ছে করে কোকিল হতে নীল গগনের কোলে,
পাখা যেন মোর নিজ ছন্দে হাওয়ায় দোলে।
ইচ্ছে করে দৌড়ে লুকাই আমার মায়ের কোলে,
মা যেন সব রাগ পরক্ষণে যায় ভুলে।
ইচ্ছে করে একতারা নিয়ে হারিয়ে যাই লালন বেশে,
যখন তখন রঙিন সুর বুনি কল্পনার দেশে।
ইচ্ছে করে নজরুল-রবী ঠাকুরের কবিতার ছন্দ হতে,
ইচ্ছে করে মহাকাব্যের দুষ্টু রাজার রাজত্ব ছিনিয়ে নিতে।
ইচ্ছে করে মেঘের দেশে বৃষ্টি হতে ফের,
যখন তখন ভিজিয়ে দেয়ার ইচ্ছে আমার ঢের।
ইচ্ছে করে সবুজ বনানীর ভোরের শিশির হতে,
পক্ষীকূল যেন তীব্র শীতে চায় নীড়ে লুকাতে।
ইচ্ছে করে বহমান নদীর স্রোত হতে,
ইচ্ছে করে রবিনসন হয়ে সাগর পাড়ি দিতে।
ইচ্ছে করে সাঁঝের বেলার আবীর রঙে গা ভাসিয়ে,
অমাবস্যার নিশিতে ফিরে আসি গাঢ় আঁধার নিয়ে।
ইচ্ছে করে পথ ভুলে হারিয়ে যাই চুপটি করে,
তোমরা যেন ডাকবে মোরে মিষ্টি পাখির স্বরে।
ইচ্ছে করে নদীর পারে ঘাস ফুল হতে,
যখন তখন নিবে তুমি মুঠো পুরে তোমাতে।
ইচ্ছে করে পাতা হয়ে ঢাকা দেই পথগুলি,
সাধ্য কার আছে সে পথে দেখে নষ্ট ধূলি।
ইচ্ছে করে দুঃখ ঘুচাই গরীর-দুঃখিদের,
মুক্তহস্তে দান করিয়ো ভাই তাহাদের।
ইচ্ছে করে আমৃত্যু আঁকড়ে ধরতে মোর দেশের মাটি,
আজ শিশুদের মহোৎসবে আকাশ-জমিন যাবে ফাটি।
ইচ্ছে করে ফের মাস্টার মশাইয়ের হাতে, পশ্চাৎপদে খাই বেত্রাঘাত,
বক্ষখানা পেতে দেবো মোর, আসুক না দেশের প্রতি যত আঘাত।
ইচ্ছে করে হেমন্তের মহোৎসব হয়ে ঘরে ফিরতে,
নবান্নের আমেজে পিঠাপুলি উদরপুরে খেতে।
ইচ্ছে করে মুঠো ভরে স্বপ্ন কিনি, মুঠো ভরে প্রেম,
আমি ইচ্ছের দেশে-বাঁধাই করি তোমাদের ছবির ফ্রেম।
ইচ্ছের দেশের রাজা আমি,
হবে নাকি মোর দেশের প্রজা তুমি?
মোর দেশের প্রজা হলে,
দ্রুত পদে এসো চলে।
যেখানেতে নেইকো দুঃখের ছোঁয়া,
তন্দ্রা, ক্ষুদা সব যাবে ছাড়িয়া।
যেখানেতে ইচ্ছে থাকবে তোমার ঢের,
ভৃত্য হবে তোমার সেথায় বড় বড় শের।
অবাক কান্ডে ভরা মোর দেশে,
যদি না আসো প্রস্তাবে পরে শেষে।
ইচ্ছের দেশের মালিক আমি,
ও ভাই, ইচ্ছের দেশের মালিক।