আজ একটা নতুন ধরনের গদ্য কবিতা লিখলাম। আশাকরি ভাল লাগবে...
সুর্যের কাছ থেকে চেয়েছিলাম বিপ্লবি চেতনা,
আর... চাঁদের কাছ থেকে...... প্রেম।
ভালবাশার আবরণে ডুবে থেকে সাধ হয়েছিল
অন্তত মিথ্যার প্রতিবার করব - পারিনি।
আর......... সাধ হয়েছিল তোকে নিয়ে যাব
সেই সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে।
তোর যদিও পছন্দ জঙ্গল...
পাতাঝরার কালে, যখন হলুদ হয়ে যেত
বনের অধিকাংশ চেহারা......
তখন তোর স্পর্শে ......
বনে ফিরে আসত সবুজের আভা
তোর স্বাধিন ভাষ্যে......
প্রাণ ফিরে পেত, আগা থেকে গোঁড়া সব্বাই
তুই যে আমার বনবিবি।
তোর ইস্পাতকঠিন মূল্যবোধে,
মুগ্ধ হয়েছিলো গোটা প্রান্তর।
তোর মনে আছে রে?
সেই ছোট টিলাটা, আজও তার সাক্ষ্য দেয়।
জী হুজুরের দল আজ আনন্দ করছে।
তাঁরা যদিও খুব ভালভাবেই জানে যে
আমাকে জোর করে আনতে পারেনি কেউই।
আমি এসেছি শুধু তোর জন্যে.........
তোর জন্যেই জীবনটা শুরু, তকে নিয়েই জীবনটা শেষ,
তোর জন্যেই কবিতার ঘোরে পাখা মেলেছিল মেঘবালিকা
তোর খোপাতেই ক্যামেলিয়া সেদিন মানিয়েছিল বেশ
তোর কথাতেই ছিল ভালবাশা, প্রেমে মিশেছিল আন্দোলন।
তোর জন্যেই ছিল উপহার, অপবাদও কিছু কম ছিল না,
তোর চিন্তায় মৃত্যুকে ঘিরে ছিল মিথ্যের আস্ফালন
যমের দল আজ নেত্রিহিন, নেত্রহিনও বটে
তথাকথিত দেবতাদের ছলনায় তাঁরা জর্জরিত
ভীত, সন্ত্রস্ত, তাঁরা পালিয়ে বেরাচ্ছে -
উত্তর মেরু থেকে দক্ষিন মেরু।
অজান্তেই তাঁরা লালবাহিনি।
কোনও এক চৈনিক ভাবাদর্শের সৈনিক তাঁরা।
হয়ত এদেশে একজন আন্দোলনকারীর তকমা হয় এটাই
কিছু লোকের অঙ্গুলিহেলনে...।
তাদের খুব কাছ থেকে দেখেছিলিস তুই...... বুঝেছিলিস তাদের কষ্ট।
রঙের পরোয়া আমরা কোনদিনই করিনি -
মানুষের বিবেক তার সবচেয়ে বড় প্রতীক।
কিছু দুঃস্বপ্নকে রোধ করতে মানুষ যে প্রতিবাদ করে
তার কথা তো ইতিহাসেই রয়েছে -
ম্যান্ডেলা বা বলিভারও তো তাই করেছিলেন
তবুও আমরা রঙের দাস, এটাই আমাদের পতাকা।
এই পতাকার ভার অনেকেই সইতে পারেনা, তুই পেরেছিলিস
বর্তমান সমাজে মহিলারা শক্তির দেবী হলেও,
সমাজ তাদের কতটা মান্য করে
.........তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
তুই ভুল প্রমান করেছিলিস তাদের,
ভুল প্রমান করেছিলিস...... আমার জোয়ান অফ আর্ক
তুই কাছে এলেই, চারিদিক ফুলের গন্ধে ভরে যেত
তোর হাসিতে স্নিগ্ধ বাতাস ভরিয়ে দিত মন প্রাণ
দুঃখে, কষ্টে, রাগে থরথর করে কাঁপত তোর ঠোঁট দুটো
তোর চোখে বিরাজ করত, প্রেম আর বিপ্লবি চেতনা...... একসাথে
বাদলার রাতে যেদিন জলসিক্ত হয়ে ঘরে ফিরেছিলিস -
সেদিন তোর ইউনিফর্মেও তোকে দেখেছিলাম
দুচোখ ভরে পান করেছিলাম সেই রূপ মাধুর্য
আমি মোহিত হয়েছিলাম তোর খোপার চাঁপা ফুলের বাহারে
আমি আচ্ছন্ন হয়েছিলাম তোর শরীরের বুনো গন্ধে, তোর ললনায়
তুই ছিলিস আমার মেরেলিন মন্রূ
তোর জন্মদিনে অপরূপ মনে হয়েছিল তোকে...
পৃথিবীর সাথে আকাশের মিলন ঘটেছিল সেদিন...
তোর আলিঙ্গনের মাদকতায় মুগ্ধ আমি এটাও বুঝিনি যে
কখন আমাদের ভালবাশার মুহূর্তকে সাখ্য দিতে জড়ো হয়েছিল কিছু কুটিল চাহুনি।
দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকেছিল তাঁরা...
কিছু বোঝার আগেই হাত হয়ে গেছিল পিছমোড়া
চারিদিক থেকে ভেসে এসেছিল অশ্রাব্য কিছু গালিগালাজ আর এলপাথারি ঘুষি
তোকে মাটিতে ফেলে টানতে টানতে নিয়ে গেছিল পাশের ঘরে
ওরা তোকে............
জ্ঞান হারানোর ঠিক আগের মুহূর্তে শুনেছিলাম তোর চিৎকার।
দুরের প্রান্তরে শেষ হয়ে যায় অমলিন ভাললাগা
সমুদ্রের প্রতিটি জলকণা থেকে প্রস্ফুটিত হওয়া একফালি রোঁদ আর
বিকেলের উজ্জ্বল সন্ধ্যায় সততার ঘ্রান উদ্ভাশিত করে চিন্তা
তোর সাথে একসাথে এই ঘ্রান নেব বলে হাত বাড়িয়েছি
এই হাত ধরে সোনার কাঁঠি ছুঁয়ে যাবে অন্তরের মণিকোঠায়
তোর চিন্তায় মগ্ন, এই তিন দেয়ালের মাঝখানের শূন্যস্থান পূর্ণ হয়নি এখনও
অথচও আমাদের মনের প্রকান্ড এক গহ্বর, গিলে ফেলছে প্রতিবাদের শেষ ইচ্ছেটুকু
শুধু সেই পথ চেয়ে বসে আছি -
যে পথ ধরে হয়ত কোনও একদিন, কোনও এক ছোট্ট মুহূর্ত
হঠাৎ খুলে দেবে ধৈর্যের বাঁধন।
তোর আর আমার হাত ধরে আবার নিজের পায়ে দাঁড়াবে এই সমাজ।