লালঘর সেখানে চলছে তরুণ,
ভালোবাসার অপরাধে কারাদণ্ড দশ বছর,
তরুণের চোখে-মুখে ঘৃণা
ক্ষোভ,
সীমাহীন অনিশ্চয়তা,
যে হাতে থাকার কথা ভালোবাসার মানুষের কম হস্তযুগল
সে হাতে এখন লোহার শিকল হ্যান্ডকাফ।
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অহংকারী তরুণী,
প্রতিহিংসার চোখে কাল নাগিনীর ফণা,
বিজয়ের হাসি ঠোঁটে।
এই তো ক’দিন আগেও দু’জনে ছিল কত আপন,
কত প্রেম,
কত ভালোবাসা,
কত আবেগময় একটা সম্পর্ক।
হৃদয়ের প্রেম,
আবেগ,
ভালোবাসা
মাখামাখি ছিল দু’টি সত্তা
মিশে গিয়েছিল একাকার হয়ে,
সীমাহীন সুখের নেশায় কাতর তরুণী,
’’আমার সর্বস্ব তোমায় দিলাম তুমি শুধু আমায়
আরো সুখ দাও,
সুখের বন্যায় প্লাবিত করো,
আরো ভালোবাসায় আমায় উদ্মাদ করে দাও,
তোমার উত্তাল ঢেউয়ে আমায় দুমড়ে মুচড়ে দাও।’’
তরুণের ঘন ঘন উত্তপ্ত নিঃশ্বাস,
বাহুতে তখন সিংহের শক্তি,
পর্বতসম উত্তাল ঢেউ,
ঢেউয়ে ওপর ঢেউ,
দোলিত-মোথিত করে একসময় ক্লান্ত অবসন্ন সাইক্লোন
নেতিয়ে পড়ল কুলে।
হঠাৎ তরুণীর চোখে জ্বলে উঠল প্রতিহিংসার বারুদ,
’’এ কী করলে আমায়?
ভালোবাসার নামে সব লুটিয়ে নিলে আমার,
ভণ্ড, প্রতারক,
এই কি ছিল তোমার মনে?’’
হতবাক তরুণ, ’’এ কি বলছ তুমি?
এ তো ছিল তোমারও কামনা,
দীর্ঘদিনের সুপ্ত বাসনা।’’
তরুণীর চিৎকারে এগিয়ে এল জনতা,
তরুণের ওপর শুরু হলো কিল, ঘুষি,
এগিয়ে এল থানা-পুলিশ,
টেলিভিশনের ক্যামেরা ছবি তুলল, ক্লিক, ক্লিক, ক্লিক,
রাস্তায় বেরিয়ে এলো মানবিক জনতা,
ব্যানার ফেস্টুনে ভরে গেল তামাম রাজ্য,
প্রেস ব্রিফিং, মানববন্ধনের ছবিতে ভরে গেল
ফেসবুক, টুইটার,
সারা পৃথিবীর মানুষের কাজ তখন তরুণের বিচার করা,
হৃদয়ের সম্পর্ক গড়ালো আদালত অবধি।
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তরুণীর মিথ্যা বয়ান,
অঙ্গ সাক্ষী, অঙ্গাবরণ সাক্ষী,
সাক্ষী আমজনতা,
তরুণের সাক্ষী তরুণীর শীৎকার
সে তো ভেসে গেছে সুখের সাগরে।
আদালতে তখন পিনপতন নীরবতা মামলার হলো রায়
ভালোবাসার প্রতিদান তরুণের কারাদণ্ড দশ বছর।
তরুণের মনে অনেক প্রশ্ন, দেশ, জাতি ও বিবেকের কাছে,
আর কতকাল নষ্ট তরুণীর মোহে অন্ধ হয়ে কত তরুণের হবে বলিদান?
সমাপ্ত।