ফেসবুক তুমি দিয়েছ সুখ,
তুমি দিয়েছো সুখের অসুখ।
তুমি রাতকে করেছো দিন
গভীর রাতে জেগে রয় সবে
কারো চোখে নেই নিদ,
মাথার ওপর বেলা ওঠে যখন
তখনো সবার চোখে নিদ।
কিশোর-কিশোরী ব্যস্ত তোমাতে
লেখাপড়া উঠেছে শিকে
বিদ্যাহীন জাতি গড়বে কেমনে সোনার বাংলা
সে স্বপ্ন বুঝি হয় ফিকে।
তরুণ-তরুণী প্রেম প্রেম খেলে
হৃদয়ের লেনদেন কতটুকু আছে,
তবুও দিনরাত চ্যাটিং চলে
অবশেষে ভুগে হারানোর শোকে চোখ মুছে।
ফেসবুক তুমি পরকে আপন করার নামে
আপন করেছো পর,
কাহারো ঘর বাঁধিবার নামে
কাহারো ভেঙ্গেছো ঘর।
ঘুমন্ত স্বামীর পাশে শুয়ে বউ
খুঁজে অন্যের বর,
নিজের বউকে পর করে স্বামী
হয়ে অন্যের বর।
বন্ধুরা সব পাশে বসে রয়
নেই তার কোনো দাম,
দূর-দূরান্তের বন্ধুর আশে
চ্যাটিং চলে অবিরাম।
নিজের বাপ-মা বিছানায় পড়ে
সেইদিকে নেই মন,
পরের বাবা জ্বরে কাতর হলে
শুভকামনা চলে সারাক্ষণ।
ব্যবসায়ীরা সব তোমরাই বদৌলতে,
ভোক্তারা সব ঠকিছে কি জিতিছে করে না কিছু গণ্য
হাতের কাছে পণ্যা পেয়ে
তাতেই হয়েছে ধন্য।
ডাক্তার পেয়েছে রোগীর সন্ধান
রোগীও পেয়েছে ডাক্তার,
উকিল পেয়েছে মক্কেলের খোঁজ
মক্কেল পেয়েছে উকিল মোক্তার।
দয়ার সাগর দানবীর সব
তোমাতে পিটায় ঢোল,
দুঃখীর পাশে দাঁড়ানোর নামে
রাজনীতিতে হয় সফল।
সত্যবাদীরা কোণঠাঁসা আজ
পোস্টে নেই লাইক, কমেন্টস,
চাপাবাজ আর তৈলবাজ মিলে
তোমার করেছে সর্বনাশ।
সত্য-মিথ্যার ইতিহাস রচিছে
তোমায় করে কলংকিত,
তোমার প্রত্যাশা সামাজিক বন্ধন
প্রতিনিয়ত হচ্ছে ক্ষত-বিক্ষত।
ফেসবুক প্রতিবাদ করো, গর্জে ওঠো,
’’আমার বক্ষে বসিয়া যারা
করে চাপাবাজী আর তৈলবাজী,
যারা করো মিথ্যা বেসাতি,
যারা করো রোজ প্রেমের নামে প্রতারণা,
তাদের আইডি আমি লক করে দিবো আজি।’’
ফেসবুক হোক সামাজিক বন্ধনমেলা,
মুর্খের হোক জ্ঞানের পাঠশালা,
জ্ঞানীদের হোক জ্ঞান চর্চার খেলা,
আমরা সবাই গাহিব তোমারাই জয়গান,
তোমার প্রতি রইবে না কোনো অভিমান
ফেসবুক দীর্ঘজীবী হও
তোমায় শুভকামনা মেলা।
সমাপ্ত।