সত্যি করে একটা কথা বলো তো,
’’তুমি কি আমায় ভালোবাসতে?’’
অথচ দেখো, এই আমি একসময় ভাবতাম তোমার সঙ্গে দেখা হলে,
তোমার চোখে একবার চোখ রাখতে পারলে,
তোমার লাবণ্যময় মুখটা একবার দেখতে পেলে,
তোমার একটা হাসি একবার দেখতে পেলে,
একবার তোমার চোখে চোখ রাখতে পারলে,
এক প্রহর কাছে পেলে,
একসাথে দু’জন হাত ধরাধরি করে হাঁটতে পারলে,
আমি বুঝি বিশ্বজয় করে ফেলবো।
সত্যিই তো তাই, তুমিই তো আমার বিশ্ব,
তুমি আমার নদী-সমুদ্র, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র,
তুমিই তো আমার পুরো সৌরমণ্ডল,
তোমাকে জয় করা মানে তো বিশ্বজয়ই।
যে তোমাকে আমি এক পলক দেখার জন্য সারাটা বিকেল,
তোমার জানালার দিকে তাকিয়ে থাকতাম,
কখন দেখতে পাবো তোমার ওড়নার আঁচল,
কখন দেখতে পাবো সেই চাঁদমুখ,
তোমার প্রতীক্ষায় অনন্তকাল কাটিয়ে দিবো বলে শপথ নিতাম।
সেই তুমি এলে,
না, তুমি না, যেন একটা পৃথিবী হাতে পেলাম,
আমরা দু’জন স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম,
আমাদের একটা ঘর থাকবে,
একটা সংসার থাকবে,
দু’টো ফুটফুটে বাচ্চা থাকবে,
আমরা একসাথে কাটাবো অনন্তকাল,
তোমারও প্রত্যাশাটা কি ছিল এমনই?
আমরা ঘর বাঁধলাম, সেই ঘরে শুরু হলো ঝড়ের তাণ্ডব,
একের পর এক ঢেউ,
বিপদ সংকেত,
মহাবিপদ সংকেত,
বাড়তে থাকলো জলোচ্ছ্বাস,
সংসার নামক রণতরী ডুবলো অতলে,
একদিন এলো সেই বিচ্ছেদ ক্ষণ,
তোমার কাছে সেটা হয়তো মধুর বিচ্ছেদ,
তোমার কাছে তো মধুরই,
যদি ভালোবাসতে তবে তোমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হতো,
আমার মতো হতো তোমারও হৃদয়ের ব্যবচ্ছেদ।
যেদিন জানলাম তুমি আর তোমাতে নেই,
তুমি অন্য কারো বাগানের সাজানো ফুল,
শোকেসে সাজিয়ে রাখা দামি অর্নামেন্টস,
সিন্দুকে রাখা জড়োয়া অলঙ্কার,
সেদিন থেকে আমার একটা কথা জানতে ইচ্ছে করে,
এই তুমিই তো একদিন আমায় বলেছিলে, ভালোবাসি, ভালোবাসি
বুকে মাথা রেখে বলতে মরব তোমার বুকে,
তবে কি তুমি আমায় সত্যিই ভালোবাসতে?
সমাপ্ত।