ব্রহ্মপুত্রের চরে নড়বড়ে এক ঘরে,
জেলে আর জেলেনী মিলে একসাথে বাস করে।
ব্রহ্মপুত্রের ডাকে জেলে-জেলেনীর ঘর সদা কম্পমান,
কখনওবা পানি ছুঁই ছুঁই করে যখনই আসে বান।
কখনওবা বেড়াহীন ঘরে বালির পাহাড় গড়ে,
কখনওবা বৃষ্টির পানি অনায়াসে ঘরে পড়ে।
জেলে যায় মাছ ধরিতে জেলেনী থাকে ঘরে,
চাল নেই, চুলো নেই নিত্য অভাব ঘরে।
রোজ দুপুরে ক্লান্ত জেলে যখনই ঘরে ফিরে,
জেলেনীর হাসিমুখ দেখে জেলের ক্লান্তি যায় সেরে।
একখানা মাত্র ছিন্ন বস্ত্র রয়েছে জেলেনীর ঘরে,
তবুও জেলেনী জেলের কাছে অভিযোগ নাহি করে।
দিনান্তে যখন জেলে ফিরে জেলেনী রাঁধে ভাত,
জেলে-জেলেনী মহাখুশি যেন পেয়ে দু’টি ডাল ভাত।
গভীর নিশীথে জেলে যখন জেলেনীকে জড়িয়ে ধরে,
আকাশের চাঁদ তখনই যেন নেমে আসে ভাঙা ঘরে।
জেলে-জেলেনীর উত্তাল ঢেউ যখনই ছন্দ তোলে,
ব্রহ্মপুত্রের ঢেউ তারি সাথে যেন তালে তালে রেখে চলে।
এভাবেই দিন যায় জেলে-জেলেনীর হাভাতে সংসারে,
জগতের সুখ বন্দী যেন তাদেরই ভাঙ্গা ঘরে।
সমাপ্ত।