-----------------
উপাখ্যান পর্ব
-----------------
সামরিক উর্দি পড়া কিছু মানুষ আমার ধূসর অস্তিত্বের চারিধারে
আরোপিত গাম্ভীর্য তাদের মেকী অবয়বে।
হাবিয়া দোজখ হতে ধার করে আনা করুনা মাখা চোখে
একজন সামরিক ডাক্তার আমার ধমনির ধুকপুক অস্তমিত জীবন
মাপার চেষ্টা করেন অনাসক্ত শীতল আবেগ নিয়ে।
কাছে পিঠে হিস হিস শব্দে একটা ইঞ্জিন সচল হয়।
যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন আরেকটা কপ্টার রওনা হয়। নতুন করে
গোলাবারুদ ঠেসে। সাইরেনের তীব্র শব্দ।।
একজন রাতজাগা রক্তরাঙা চোখের উদ্ধারকর্মী
তার রক্তমাখা এপ্রোনের মলিনতার মধ্যেও
আমার হাতটি ধরেন। নির্লিপ্ততার সাথে।
দু’আঙুলে অনুভব করার চেষ্টা করেন
একজন কবির,
একজন অধুনা স্মৃতিলুপ্ত ও চেতনারহিত কবির প্রাণস্পন্দন।
অল্প বয়সি একজন সেবিকা-
যার সদ্যই ব্রেক আপ হয়েছে তার ফিয়ান্সের সাথে
সেও বিরহ ভুলে আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
খানিকটা করুনা তার রক্তশূন্য কপালের ভাঁজেও স্পষ্ট হয়।
আমি একটা হিম শীতল পাটাতনের স্ট্রেচারে চিত হয়ে শুয়ে
করিডোরের ছাদে একটা মাকড়শা দম্পতির প্রণয় উপাখ্যান
উপভোগের বৃথা চেষ্টা করি।
আধো চেতনায় তলিয়ে যেতে যেতে শুনি মৃদু ফিসফিস,
’না, না, এ সে নয়”
এ সে নয়।
তার আরো সময় বাকি।”
আমিও ভাবি, তাইতো,
আমার কাল রাতের অসম্পূর্ন কবিতাটার
শিরোনাম লেখা বাকি।
------------------------
এপিটাফের আখ্যান
------------------------
একজন কবি কেন সামরিক হাসপাতালে মরবে-তার কোনো উত্তর পাইনা।
যুদ্ধ তো তার কলমে ছিল, নরম প্যাপিরাসের বুকের জমিনে।
একজন কবি কেন জলপাই রঙের সাঁজোয়া যানে বাহিত হয়ে
অন্তিম যাত্রা করবে ওয়্যার সিমেট্রিতে-তারও উত্তর পাইনা।
সে তো সমাহিত হতে চেয়েছিল শিমুল বনে।........
অসমাপ্ত জিজ্ঞাসা নিয়ে অনাদৃত কবি বিদায় হন।
তখনো তার ঠোঁটে লেগে ছিল কয়েকটি অনুচ্চারিত প্রশ্ন। আর কিছু অতৃপ্তি।