আমার খুব সেই দিনগুলোতে
ফিরে যেতে ইচ্ছে করে,
সেই কাক ডাকা ভোর,
সূর্যের আলতো ছোঁয়ায়
ভালোবাসায় জড়ানো কিছু কণ্ঠস্বর এ
ছেড়ে যাওয়া ঘুম,
সবুজ ছুঁয়ে ছুঁয়ে হেটে যাওয়া সেই মেঠো পথ
ছোট্ট সে বাড়ির আঙিনা,
চারিদিকে পাখিদের কলরব,
এককোণে চুলো র পাশে প্রিয় মুখ জননীর,
সেই সোনালী সকাল,
খুব ফিরে পেতে ইচ্ছে করে আমার, খুব।

কতদিন শোনা হয়নি দাদুর মুখে,
জ্যোৎস্না রাতে বলা, বাড়ির উঠোনে বসে-  
সেই গল্প আর ছড়া।
কতদিন প্রিয় বোনের সাথে খুনসুটি করা হয়নি।

বহুদিন বই,খাতা,পেন্সিল হাতে -
বাবার সাথে পড়তে বসা হয়না,
বকুনি খাওয়া হয়না বাবার।
নতুন বছরে,স্কুলের নতুন বইয়ের সেই ঘ্রাণ,
পরম আদরে বাবার হাতে মোড়ানো বইয়ের মলাট,
বহুদিন ছুঁয়ে দেখা হয়নি।

সেই স্কুল,সেই সবুজ খেলার মাঠ,
ক্লাস,শিক্ষক,সতীর্থ,
বহুদিন দেখা হয়নি তাদের সাথে।

আচ্ছা -শম্ভু'দা র সেই নারকেল দিয়ে বানানো আইসক্রীম,
এখনও কি পাওয়া যায়?
স্কুল গেটের পাশে,আলম ভাইয়ের মজাদার সেই ঝাল চানাচুর,
কতদিন স্বাদ নেয়া হয়নি তার।

বহুদিন - সবকিছু ভুলে,বন্ধুরা মিলে
প্রাণোচ্ছল আড্ডায় মাতা হয়নি,
ঘুরে আসা হয়নি একসাথে -চির অপরূপ,
সেই "নাটোর" এর চলন বিল।

বাড়ীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট্ট সে নদী,
আবার ইচ্ছে করে -সাতড়ে পাড়ি দেই দলবেঁধে।
আবার ছুঁয়ে দেই ওপারের সবুজ,
নৌকোয় ছুটে যাই সেখানে সবাই,
যেখানে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে -নদী আর আকাশ।

আমার খুব চলে যেতে ইচ্ছে করে;
সেই ছোট্ট গ্রামে,একেবারে।
এই ইট,কাঠ আর পাথরের শহর ছেড়ে,
এই নির্মম বাস্তবতার যান্ত্রিক জীবন ফেলে,
আমার খুব সেই সময়ে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে।
কে আমায় ফিরিয়ে দেবে বলো?
সেই অলস দুপুর,
স্নিগ্ধ গোধূলী বেলা?

কাধের উপর এক একটা বৃহৎ পাহাড়,
বিরামহীন এক একটা দিন- সব,সব কিছু ছেড়ে,
এ আবেগহীন শহরের সীমানা ছাড়িয়ে বহুদূর,
বুড়িগঙ্গা ছাড়িয়ে যমুনা,
যমুনা ছাড়িয়ে ফুলজোড় -
তার তীর ঘেঁষে,
আমার প্রিয় গ্রাম "চান্দাইকোনা" র কোলে।

আমার খুব ফিরে যেতে ইচ্ছে করে আবার।