সেদিন হঠাৎ
সাধ জাগল পাখি পোষার
একজোড়া ফিঞ্চ
ছোট্ট খাঁচা
তাদের কিছু খাবার দাবার
একটা হাড়ি
সঙ্গে আবার
খড় কুটো ঘাস-
খাঁচার ভিতর বসিয়ে দিয়ে ডিম পারাবার,
বাজার থেকে কিনে আনলাম।
বারান্দার এক কোনায় ওদের জায়গা দিলাম-
'সংসারী হ..
এইযে তোদের খাঁচা দিলাম
এটাই জমিন, দেশ, পৃথিবী,
এই যে হাড়ি
এখন থেকে এই সংসার,
এটাই গৃহ।
গড়বি কিছু নিজের হাতে?,
ঘরের ভেতর বা উঠোনে?
মন যদি চায়
তার জন্যও উপায় দিলাম
একমুঠো এই
খড়কুটো নে'।
খাঁচার দরজা বন্ধ হতেই
জ্বললো বারুদ!
ফুড়ুৎ ফারুত,
দুরুম দারাম!
উড়লো দুটোয় চার দিশাতে
এতো করে ধমকে দিলাম
ঠাণ্ডা মাথায় ফের বুঝালাম
মৈত্রিতে কেউ রাজীই নয়
পারলামই না আর মিশাতে।
এক অপরের পাখ ছিঁড়ে দেয় সামনে পেলে
ঝাপটা মেরে।
আমিও শেষে
হতাশ হলাম
সালিশ বিচার দিলাম ছেড়ে।
'ইচ্ছে করে
নিজের ঘরে
নিজের গায়ে করবি ক্ষত,
মরগে তোরা নিজের মতো!'
এরপরে আর
অফিস কাছার..
দোকান বাজার..
নিজ সংসার, সংসারিনী..
ব্যাস্ত থাকায় লাখ অজুহাত,
ক'দিন ওদের ধার ধারিনি।
এমন করে সপ্তা খানেক
পার হলে ফের সামনে এলাম।
একটা দেখি কোনায় বসে
রৌদ্র পোহায়।
আর একটা সে
খড়ের কাঠি আনছে তুলে,
হাড়ির ভেতর জমাচ্ছে, আর
নিঃশেষিত বাটির খাবার।
পূর্ণ করে বাটি টাতে
খাবার দিলাম।
দুটোই দেখি
দেখতে পেয়ে ছুট্টে এলো
খাবার খেলো। পাশাপাশি,
শত্রুতা বাদ।
আমি বললাম-
'কোথায় আজ আর ঝগড়া বিবাদ
করলি না যে!'
শুনে দুটোয় মুচকি হেসে
ছোট্ট খাঁচার চিলতে হওয়ায়
ছোট্ট দুজোড় ডানায় ভেসে
চললো ফিরে যে যার কাজে।
স্বস্তি পেলাম।
সেদিন যখন খাবার দিতে
আবার এলাম
তিনটা দেখি ধবধবে ডিম
খড়ের বাসায়,
কি ফুটফুটে!
আগলে তাদের আছেন বসে
পক্ষী মশায়,
পক্ষিনী সে পাত্র থেকে
জল আর খাবার খাচ্ছে খুঁটে।
খাবার খেয়ে ফিরলে বাসায়
বসলো সরে পক্ষী মশায়
পক্ষীনি ফের বসলো গিয়ে ওমে..
আমি ভাবলাম-
'এই উঠেছে জমে!'