আকাশ এখন ঘন নীল, সাদা সাদা মেঘের ফেরি
স্বপ্ন নিয়ে ঘুরছে অবাধ মনে অসীম শূন্যের বুকে,
আর সবুজ পাতায় চঞ্চল বিকেলের কোমল হলুদ আলো
ধীরে ধীরে সমুদ্র স্নানে চলছে...... এমন সময়
মা দাঁড়ায় এসে একাকী বাড়ির আঙ্গিনায়
শূন্য চোখে পথ পানে চেয়ে থাকে........
উৎফুল্ল বাচ্চাদের দল, পাখি, এমনকি পশু গুলোও
দিনের খেলা শেষে ফিরছে যে যার ঘরে........
এক সময় এমন ক্ষণে তার ছেলেরাও ঘরে ফিরত একে একে......
ডুবে যাওয়া সূর্য নতুন করে ফিরত ঘরে......
আজ কেউ পাশে নেই, সময় ডাক দিয়েছে
জীবনের প্রয়োজনে অনেক দূরে তারা আজ!
মায়ের বুকে গভীর শূন্যতা ভর করে
অস্বাভাবিক বদলে যায় হৃদপিণ্ডের গতি.........
কষ্ট ভীষণ কষ্ট.... অর্থহীন হয়ে পড়ে সবকিছু...
ছোট ছেলে পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত, হোস্টেলে থাকে
সামনে কঠিন সময়, একটি উজ্জ্বল ক্যারিয়ার চাই......
বড় মেয়ে ১৩ বছর ধরে শ্বশুরালয়ে
এখন তিন সন্তানের জননী,
নিজের সংসার, বাচ্চাদের পড়াশোনা
বড় ব্যস্ত থাকে সব সময়,
তবু তাঁরা আসে সুযোগ পেলেই মাঝে মাঝে
মায়ের সাথে কাটিয়ে যায় কিছু স্বর্গীয় সময়,
কিন্তু মেঝো ছেলে......
কখনো সন্ধ্যা লগ্নে মা তাকিয়ে থাকে নিষ্পলক আকাশে
খোঁজে মেঝো ছেলের মুগ্ধ দৃষ্টি।
তাঁর মেঝো ছেলে বড্ড বেশি ভালবাসত এই আকাশ,
কখনো একা একা কখনো বা মাকে সাথে নিয়ে
আকাশে চোখ রেখে কাটিয়ে দিত দীর্ঘ সময়
আর ছোট শিশুর মত ন্যাকামো, কত আহ্লাদ!
তাঁর ছেলে কি এখনো আকাশ ভালবাসে?
ও দেশের আকাশে কি শরত হাসে?
হায় জীবন! হায় সময়!
কত দিন হল মায়ের চোখ ওকে দেখেনা!
ভাষাহীন প্রচণ্ড করুণ ব্যথার বন্যা জাগে বুকে
মায়ের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে উঠে
লোকচক্ষুর আড়ালে ছোটে যায় ছেলের রুমে
কোন পুরনো শার্ট আঁকড়ে ধরে বুকে
অথবা বুক লাগিয়ে শুয়ে পড়ে বহুদিনের শূন্য বিছানায়
একটু যদি সামান্য ছোঁয়া পায়! কত দিন হল.........
ছেলেকে একটু বুকে লাগানো হয় না!
কত বছর হয়ে গেল শেষ কপালে চুমু.....
অব্যক্ত ব্যথার পাহাড় গলতে শুরু করে, গলে বিরামহীন......