শুভ নববর্ষ! শুভ ১৪২০!
বাংলা নববর্ষ বয়ে আনুক অকৃত্রিম আনন্দ
কবিতার মতো - নতুন নতুন সুন্দর সুন্দর
সুসজ্জিত অসংখ্য কবিতায় - এ প্রত্যাশায়
- সৌখিন কবিতা পাঠক
--------------------------------------------------------------------
না, আমি কবি নই - নিতান্তই এক সৌখিন কবিতা পাঠক মাত্র! আমি কবিতা
পড়ি মনের আনন্দে - খুব ভাল লাগে; - কবিতার মতো কে আর দেয় এত
সুখ, এত ভাললাগা! তাই, কবিদের প্রতি আমার অপরিসীম ভাললাগা, ভালবাসা,
শ্রদ্ধা আর ঋণ জমে ওঠে। এই ভাললাগা, ভালবাসা, শ্রদ্ধা আর জমে ওঠা ঋণ
শেয়ার আমার প্রতিদিনের পাঠ থেকে কিছু মনে গেঁথে যাওয়া কবিতার এই
সন্নিবেশ; - এ শুধু কোন এক অন্য অবসরে আরো একবার-বহুপাঠে কাব্যরস
আস্বাদনের আয়োজন বা প্রয়োজন মাত্র।
আজকের ১৫ কবির প্রতি আমার হৃদয়ের অকৃত্রিম উষ্ণতা নিবেদন! আর যাঁরা
কবি, হৃদয়-মেধা নিংড়ে কবিতা আনে এ কবিতার আসরে প্রত্যহ, যাঁরা এখানে
অবর্তমান (হয়ত আমার অপ্রস্তুত পাঠাভ্যাসে), সেই সব কবি-হৃদয়ের প্রতিও
আমার ভালবাসা অন্তহীন! তাঁদের হাতেও আমার কাব্যরস পান ও প্রত্যাশা
নিরন্তর! আগামিকাল তাঁদের কবিতার মূগ্ধতায় ডুবে যেতে চাই!
কবিতা সুন্দরের প্রতিমা হয়ে আসুক, চিরন্তন হৃদয়-অনুভূতির ছবি হয়ে উঠুক,
মনন-শৈলীতে জেগে উঠুক, হয়ে উঠুক উজ্জ্বীবনের জীয়নকাঠি - এই চির
প্রত্যাশায় - সৌকপা।
--------------------------------------------------------------------
পাকা কলসির গলা জোড়া দিয়ে
- অরুন কারফা
পাকা কলসির গলা জোড়া দিয়ে
নানান নকশি গাত্রে সাজিয়ে
রাঙিয়ে নিয়ে তারে অপূর্ব বাহারে
মধু রাখতে চেয়েছিলেম কানায় কানায়
বধূর মন যাতে উল্লাসেতে ভরে যায়।
চিত্ত কিন্তু হলনা বিগলিত
সংসারও গেল ভেস্তে কার্যত
এমতাবস্থায় নিঃসীম তমসায়
বিনিদ্র যামিনী কাটাল কামিনী
ভোরের ডাকেতেও শিশির আসেনি।
রজনী শেষের অন্তিম লগনে
গগন হলেও রক্তিম তপনে
কাঙ্ক্ষিত আশার বানী, না শোনানোয় ঊষা রানি
চিড় ধরা সম্পর্কে বাড়ল ফাটল
নীল আকাশে ছাইল কালো বাদল।
মধু ঝরতেই জোড়ের ফাঁকে
তেড়ে এলো মক্ষী ঝাঁকে ঝাঁকে
ময়ূরকণ্ঠী রঙ, দেখে তাদের বরং
ফিরে পেলেও বা বধূ আত্মবিশ্বাস
ছাড়ল বিদায়ি বছর দীর্ঘশ্বাস।
--------------------------------------------------------------------
গ্রামটিকে বাঁচিয়ে রাখবো চিরদিন
- কবীর হুমায়ূন
দেখতো- এ গ্রামটি তোমার পছন্দ হয় কি না!
তোমারই জন্য রক্ত-ফুলে সাজায়েছি এ গাঁও;
পায়ে তার রূপালি নদী, আম-কাঁঠালের বন
চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে;
উদাসী কবির মন বিমোহিত, উন্মন, উচাটন।
একদিকে দু'টি অশ্বত্থ মাথা ঝুঁকে বসে আছে-
হাজার পাখির গান সকাল সন্ধ্যায় তার বুকে
বেজে যায় অবিরাম কল্লোল সুরে।
দূরে শুয়ে আছে নিঃঝুম কবর খোলা একাকী,
তার পাশে ঘুমায় শ্মশানের চাতাল,
গীর্জার ঢং ঢং বেজে যায় নির্দিষ্ট সময় অন্তর,
কৈবর্ত্য পাড়ায় শুটকির সোঁদাল ঘ্রাণ,
সুরেলা কন্ঠের মুয়াজ্জিনের কল্যাণের পথের আহ্বান,
উলুধ্বনী দেয় লাল পেড়ে শাড়ী পড়া কিশোরী বধু,
নাঙ্গা পায়ে হেটে যায় শিষ্য সমেত বৃদ্ধ ভিক্ষু ।
হরিদাসীর অন্ন-প্রাশনে উপস্থিত মোল্লা বাড়ীর বউ,
রমিজ মিয়ার ছেলের বিয়েতে বড্ডো ধুমধাম-
কীর্তনের আসর হবে সন্ধ্যা বেলায়;
রোজারিও নিজের পছন্দের বউ এনেছে এ গাঁয়ে-
প্রদীপ আর দুর্বোফুলের কুলোয় বরণ করে নেয়
রহিম শেখের মেঝো বউ আর হারানের বিধবা ভগ্নি;
এমন একটি গ্রাম তুলে এনেছি তোমারই জন্য।
যদি পছন্দ হয় তোমার, তবে-
এসো, এখানে আমরা বসবাস করি আজীবন।
আমাদের প্রত্যয় হবে-
গ্রামটিকে বাঁচিয়ে রাখবো চিরদিন-
বুকের রক্ত দিয়ে হলেও।
--------------------------------------------------------------------
ক্ষনিকের বিনিময়
- অর্বাচীন স্বজন
যদি একমুঠো স্বপ্ন দাও আমায়
নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি আমি
দাও যদি সহস্র কবিতা
পারি আমি আকাশ ছুঁতে।
আরও হাজার বছর কিংবা
লক্ষ্য বছরের অপেক্ষায়ও রাজি!
যদি দাও একটি গোলাপ
হে মহাকাল আর ধরনী -
আর নয় বিভ্রান্তি! কোন রহস্য
অস্বীকার করবো আমি নিজের অস্তিত্ব
হারিয়ে যাব ব্ল্যাক হোলে
যদি স্বাধীন একটি দিন দাও আমায়।
এই আশাটুকু নিয়েই নিরন্তর বেচেঁ থাকা
নইলে -
কবেই ছিড়ে ফেলতাম হতচ্ছাড়া কবিতার খাতা
খুজেঁ বেড়াই শুধু কে হবে মুক্তিদাতা?
--------------------------------------------------------------------
বলছে জীবন
- সুশীল রায়
একটা জীবন চলছে এবং একটা জীবন ইচ্ছে,
এক প্রবাহে দুইটি জীবন তাল পাকিয়ে দিচ্ছে।
চলছে জীবন চাকরি করে, ইচ্ছে জীবন কবি,
চলছে জীবন ছিন্নপত্র, ইচ্ছে লাল করবী
চলছে জীবন অফিসে যায়, বস্'কে বলে, হাঁ জি,
কাঙ্খা-দায়ে বসের পায়ে তেল দিতেও রাজি।
ইচ্ছে জীবন অন্য ছাদে আকাঙ্খিতার সঙ্গে
স্নান সেরে নেয়, বিমুগ্ধতায় অঙ্গ ছোঁয়ায় অঙ্গে।
বলছে জীবন: চলছে জীবন জীবনের নির্মোক;
বলছে জীবন: চলছে জীবন ইচ্ছে জীবন হোক।
--------------------------------------------------------------------
বসন্ত বরণ
- সাগর কাজী
মনটা আমার গাইছে সুরের ছন্দতে আজ কোন সুখে ?
আসল মধুর বসন্ত দিন তাই তো হরষ বিণ বুকে ।
গাইছে কোকিল মাতল নিখিল সেই গানে ,
কানন কুসুম বাস তুলে আজ খুব ঘ্রানে ।
তাইতো সুরের বান ছুটে মোর গান আসে আজ এই মুখে ।
মনটা আমার গাইছে সুরের ছন্দতে আজ কোন সুখে ?
বইছে অধীর দখিনা সমীর প্রাণ আসে ভাই নিশ্বাসে ,
বসন্ত ঐ আসছে মধুর রুপ ধরে তাই দিক ভাসে ।
গাইবি কে আয় সঙ্গে আমার আয় তোরা ,
চল বসন্ত সুর সঙ্গিতে গীত গাই মোরা ।
মনটা যে আজ উতলা আকুল করতে বরণ সুখটুকে ।
মনটা আমার গাইছে সুরের ছন্দতে আজ কোন সুখে ?
--------------------------------------------------------------------
কৃষ্ণসুন্দরী ।
- তরুন তুর্কী
গান্ধী থেকে ম্যান্ডেলা, লুথার কিং থেকে বেলাল
কালের স্বাক্ষী ; কৃষ্ণবর্ণের উষ্ণ উদারতা সুমহান চিরকাল ।
শান্ত-সৌম্য নম্রতার চাদরে উজ্জলতার প্রতীক তাঁরা
মানবের মানবতা চেনাল নতুন সাজে, শেখাল জীবনধারা ।
মাতা নহে তাদের কোন শ্বেত-শুভ্র গৌর বর্ণ নারী ;
নির্মল মহানুভবতার, রুঢ়তার অসাঢ়তার দীক্ষা দিল জন্মদাত্রী কৃষ্ণসুন্দরী ।
কালো, অসীত, শ্যাম বলে তোমারে খোঁটায় কে ?
সম্মুখে আন ; নির্বোধ-মূর্খ, অজ্ঞ-অধম, নচ্ছর হতচ্ছড়াটাকে ।
দীন-হীন জ্ঞানে মূর্খজনে দূর্বোধ্যে ; বিধাতা দানিত তোমার ঐশ্বর্য্যে
নিশিতের অমানিশায় বিকশিত সৌন্দর্য্য, নিহিত তোমার শৌর্য্যে ।
বোঝে না বলে তোমারে খোঁচায় ; বলি, শোন গো কৃষ্ণসুন্দরী
দানিয়াছে তোমারে স্বয়ং বিধাতা, মনোরম-শোভাময় করি ।
গাত্র-বর্ণে পাত্র কুঞ্চনে মনে কি তোমার ব্যাথা ?
সয়তে পার না, কন্যাদায় বিদ্ধস্ত পিতার কাতরতা !
তোমারে বোঝে সাধ্য কি ! নরাধম পাত্র-মহাশয়ে
ধরনী দেখার ভঙ্গী যে তার চোখে কালো চশমা পরিয়ে ।
অভাগা-অপদার্থ সে, কালো-নীচতা হৃদয়ে ভরি
চেনে না তোমায় ; তাতে কি ! তুমি তো স্বরুপে অপরুপা কৃষ্ণসুন্দরী ।
কোলাহল কর্মচঞ্চল ব্যস্ততা আর আলোকাজ্জল দিনের শেষে
জুড়োয় মন-প্রান, কুড়িয়ে প্রশান্তি-বিশ্রাম কালোরাতে এসে ;
নির্জনতা নিস্তব্ধতা কালো রাত্রির ঘোর অমানিশায়
পরম শান্তি পরম প্রাপ্তি ; ধবল দিনের পর নিশির মায়ায় ।
ধরনী জুড়ে রজনী আছে কৃষ্ণরুপ ধরি
নিশিতের মাঝে অসীত সাজে কৃষ্ণসুন্দরী ।
কালো বলে নিজেরে ছোট ভেব না, দেখো না অবহেলে
আপনারে বিদ্ধ করো না বেদনার নীলে ; তোল না নিজেরে শূলে ।
ছায়া কালো, নিশি কালো ; কালো যে দুনিয়াজুড়ে
সাদা-কালো পাশাপাশি মিশে প্রকৃতির রহস্যের ভিড়ে ।
বর্ণের লাগি মানবের মান, কভু হয় না পাল্লা-দাড়ি
গৌরের পাশে সমান মহান মহীয়সী কৃষ্ণসুন্দরী ।
--------------------------------------------------------------------
হ্যাঁ, আমি মা হতে চাই
- সৈয়দ জাহেদ হোসেন
আমার খুব ভয় লাগছে,
-আমি একটা কবিতা শুনাব।
আমি কবিতা শুনব না।
-একটা গান শুনায়?
না, তাও শুনব না, আমি বাড়ী যাব।
-এই পূর্ণিমার ভরা নীল জ্যোৎস্না ছেড়ে তুমি বাড়ী কেন যাবে?
আমার খুব ভয় লাগছে, দেবরাজ।
-কত বড় নীল আকাশ তোমার মাথার উপর, ভয় পাচ্ছ কেন?
আমি কাঁপছি?
-আমিও কাঁপছি।
তুমি কাঁপছ কেন?
-তুমি কাঁপছ কেন?
আগে তোমারটা বল?
- পূর্ণিমারই ভরা নীলে
আকাশ তারা চন্দ্র ছায়ায়,
জ্যোৎস্না মাখা রাত্রি তোমার,
একটুকু কি দিবে আমায়?
দিলাম। নাও।
-বুকে এসো,
আসলাম,
-শক্ত করে জড়িয়ে ধর,
ধরলাম।
-আরও শক্ত করে, এইবার বাড়ী যেতে চাও?
বাড়ীতে চলে এসেছি।
- তুমি যখন এলে বুকে
কাঁপন আমার গেল থেমে
শীত টীত আর লাগছেনা
তোমায় আজি ছাড়ছি না।
ছেড়ে দিব,
-না।
ঘেমে যাচ্ছ,
-এই ঘামে তোমার স্নান হবে,
উফ গন্ধ!
-এই গন্ধ তোমার বাসরের গন্ধ,
বাসর?
-এই বাসরে তুমি নারী হবে,
নারী?
-এই নারীত্বে তুমি মা হবে,
হ্যাঁ, আমি মা হতে চাই।
--------------------------------------------------------------------
মহাশূন্য
- হাদী রকিব
চেয়েছি ছুঁতে টুকরো একটি কাঠ
হাতেতে পেলাম কারুকার্যের ঘোড়া!
ভেবেছি একটি পংক্তি লেখা হোক
আকাশে তাই বৃষ্টির মেঘমালা!
মনে ছিল সাধ “একাকী একটি ঘর”-
চরাচরে আজ মহাশূন্যের খেলা!
--------------------------------------------------------------------
cholbeee........
- আলোকীত অন্ধকার
SINDABADER JAHAJE UTHAR ICHSA AMAR KOME JACHSE.........
HOYTO AMAR PHONE E BARBOSA WILL NEVER CALL.......
AMAR SOTOBELAR KHELAR SHATHI J HAT UCHU KORE DHORESILO.........
SHEI HAT R O UCHUTE TULTE KOTOI NA UCHUTE UTHLAM..........
SHAGOR TOLER SHOKOL MUKTA JOKHON MULLO HARAY........
ONTORYKKHER ONTOHIN POTHER SHESH TA NA DEKHEI HASHIGULO VENGE DEY KANNAR GHUM.........................
সিন্দাবাদের জাহাজে ঊঠার ইচ্ছা আমার কমে যাচ্ছে .........
হয়ত আমার ফোনে বারবোসা উইল নেভার কল.....
আমার চোট বেলার সাথী যে হাত উঁচু করে ধরেছিল ......
সেই হাত আরো উঁচুতে তুলতে কতইনা উঁচুতে উঠলাম.....
সাগর তলের সকল মুক্তা যখন মুল্য হারায় ....................
অন্তরিক্ষের অন্তহীন পথের শেষে তা না দেখেয়ি হাসিগুলো ভেঙ্গে দেয় কান্নার ঘুম....................
--------------------------------------------------------------------
বহতা জীবন
- মামনি দত্ত
ধান শীষের কোমল মায়া শালিখের চোখে
চোরাপথ আঁকে হেমন্ত এক সন্ধ্যায়
কুয়াশারা ভিড় করে নদী জল মেখে,
তল পাওয়ার আশায় আমি পা রাখি
গোপন পথের বাঁকে, হাসনুহেনা গন্ধে
আকর্ষণ একি অনাবিল টান,
ডুবিয়ে ছাড়ে আপাদমস্তক তবুও
নিশ্চুপ আমি প্রাণ হাতে নিয়েও
খড়কুটো তে বাঁচি সরল জটিলে
সেই সন্ধ্যায় ,
আদতে আমার সংগী একাকিনী
উদাসী এক নদী।।।
--------------------------------------------------------------------
পলাশ ও স্বপ্ন-আলো
- চন্দ্রশেখর (আলোর পথযাত্রী)
*
পলাশ
হাওয়ার কাঁপন থেকে দীর্ঘশ্বাস
যেভাবেই দেখ,
সে লাজে রাঙা পলাশ
*
স্বপ্ন-আলো
স্বপ্ন তবু ছোট্ট নয়, স্বপ্ন মহাজীবন
স্বপ্ন ঘিরে উলকি আঁকে, ফুলকি ছোটায় আলো
হে মহাজীবন, ক্ষুদ্র আমি, হৃদয়ে আগুন জ্বালো
--------------------------------------------------------------------
আমি আর তুমি
- জি,এম, হারুন-অর-রশিদ
যুবক
আমি,
একলা নীড়ে
আনমনে কষ্টের গান গেয়ে
হয়ে যাই জীবনানন্দ দাস।।
যুবতী
তুমি,
বলাকার ভীড়ে
বনলতা সেন না হয়ে
হতে চাও নিঃসঙ্গ আকাশ।।
--------------------------------------------------------------------
ছোট্ট চোখ বিশাল আকাশ
- ত্রিচরণ
ছোট্ট নদী সাগর শরণ
ছোট্ট চোখ বিশাল গগন
ছোট্ট বুক বিরাট স্বপন।
--------------------------------------------------------------------
মধ্যরাতে এসো না, লজ্জা পাবে
- মৄত্তিক মাসুম
প্রত্যূষের আয়নায় প্রত্যহ মুখ আঁকা
প্রত্যহ নতুন মুখোসে মুখ ঢাকা
প্রত্যহ প্রাতঃ আয়োজন
প্রত্যহ নিজেকে
লকারে
রাখা
সকাল
দুপুর
বিকাল
সন্ধ্যাটাও
এক এক পোশাকে ঢাকা
শুধু মধ্যরাত বিবস্ত্র করে প্রত্যহ অন্ধকারে
তুমি রেখো না চোখ মধ্যরাতে
সব অন্ধকার উড়ে
যাবে ভীষণ
জোসনা
ঝড়ে
মধ্যরাতে এসো না, লজ্জা পাবে।
--------------------------------------------------------------------
আঁচড়
- মুক্তি আর প্রেম মানুষের জন্যে
সবসময় নিজেকে মনে হয় পথের ভাবুক
ভুলে যাই বাড়িভাড়া দিতে, বিদ্যুত চলে গেলে
মোমবাতি জ্বালাতে,
কে নিয়ন্ত্রণ করছে আমাকে? বাড়িটা সর্বক্ষণ হেঁটে যায়
পিছনের দরজা ডিঙিয়ে,
দেখা হয়না জল আর জীবনের খেলা, যেখানে খেলছে মানুষ।
অফিসের আবর্জনা মস্তিস্কের খুপরিতে দু-তিন রাত রেখে
বেচে দিতে ইচ্ছে করে স্থির বাগানের কিচিরমিচির
যন্ত্রণার ঝুড়ি।
পঁচা কাঠের গন্ধ আমার দৃষ্টিগুলোকে ভোঁতা ব্লেইড দিয়ে
কেটে নিয়ে যায় কলা বিক্রেতার দোকানে, সারি সারি
দুঃখ-দৃষ্টি রশি দিয়ে বাঁধা - দেখানো হচ্ছে সবাইকে
সিনেমা হলে ছবি তুললে কেউ তো
বাধা দেয় না, পকেটে টাকা না থাকলে এখন
খেলনা ঘোড়া,বিস্কুট, চা-পাতা,
দুই হালি কলা না কিনে আমি শুতে চাই আদ্র বিছানায়।
পকেটমার একবারও তাকায় না
সবসময় এরকম লাগে -
সারারাত ঘরের দরজাটা কে যেন খুলে রাখে
লিফটে নামতে নামতে এক দলা ঠান্ডা থুতু নখ আর চুল
ধরে নামিয়ে দেয় লোকাল স্টেশন এ -
মাছের কাঁটা গলায় আটকে যায়- রহস্যময় ঝাপটানি
আমায় অন্ধ করে দেয় - ললাটে নেমে আসে নিমিষে
এক থালা অথর্ব ছায়া - ঘেন্না ধরে আসে
মানুষের শারীরিক ব্যাথা,
যখন-ই ভাবি শীতল ক্রোধগুলো জমা করে
আগামী মঙ্গলবার নতুন বাড়িটি'র অভিমুখে ছেড়ে দেব
দেখব আমার জলন্ত হাত আর অনুশোচনা
শিখায় কামড়ে কামড়ে একটু মমতায় দুলিয়ে লজ্জা পায় কিনা
তখন কোথা থেকে কিছুটা কৃত্তিম সুখ ঠোকর মারে,
দেখা হয় সাদা পাখি
বেলকনিতে সুচিন্তিত বসে আছে, কফি-কাপ থেকে এক চুমুক
জল খেয়ে জল ছিটাচ্ছে আয়নায় ,হাসপাতালের করিডরে;
সবখানে ময়লা কাপড়, চোখ, আলপিন, পানির বোতল
ছড়ানো, আমিতো খুন করিনি।
এখনো দেখা হয় জন্মের নাড়ি, নিস্পাপ হাসি, জরায়ুর ব্যাথায়
আলগা অস্থিরতা, চাপরাশিরা চিত্কার করে ডাকে
বৃষ্টি ঝরে গেলে
ভুল করি -
অফিস-এ যাওয়ার পথে দেখা হয় এক দল নগ্ন শিয়াল
লাইন ধরে দাড়িয়ে আছে, শুকনো দৃষ্টি জানালায়
সুযোগ পেলে হয়ত আমাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়বে।
--------------------------------------------------------------------