আমার সুধাদাদু
আমার সুধাদাদু ছোটবেলায়
আমাকে স্কুলে নিয়ে যেত
তখন আমি খুব ছোট্ট
সবে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ি
দাদু স্কুলের ভ্যানচালক ছিল
চারদিকে নেট আর টিন দিয়ে
ঘেরা ছিল দাদুর ভ্যান
দাদু ভোটপট্টির ওদিক থেকে
আরও পাঁচ ছয় জন ছাত্র নিয়ে আসত
দাদু যখন সাড়ে দশটা নাগাদ চলে আসত
আমি কোনো দিন তখনও হয়ত
নদীতে স্নান করতেই আছি তো করতেই আছি
তো কোনো দিন দাদার সঙ্গে মারামারি চলছে
দাদু তখন এসে আমাকে নিয়ে যায়
তবে বেশি দিন পড়া হল না আর
আমার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল
ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল যে কোথায় উঠে গেল
জানার চেষ্টাও কোনো দিন করি নাই আর
তবে অন্য স্কুলে যখন ভর্তি হলাম
তারপর থেকে আর তেমন দাদুর দেখা হয় না
দাদু মাঝে মাঝে আসত আমাদের বাড়িতে
তবে দাদু যখন আসত
তখন আমি হয়ত খেলতে চলে গেছি
নয়ত আমি ঠাকুমার কাছে আছি
তখন আমি একটু বড় হয়েছি
আজও খুব মনে পড়ে সেদিনের কথা
সেদিন দাদু এসেছিল আমাদের বাড়িতে
মেলা থেকে একটা বাঁশি কিনে এনেছিলাম
বাঁশি বাজানো শিখব বলে
সেদিন আমার কাছে বাঁশি দেখে দাদু বলে
তুই বাঁশি বাজানো শিখবি?
আমি হ্যা বললাম
তারপর দাদু বাঁশি বাজিয়ে শোনালো
সেদিন দাদুর বাঁশি শুনে মনে হয়েছিল
দাদু তো খুব সুন্দর বাঁশি বাজায়
সেদিন দাদুর বাঁশি শুনে মনে মনে ভেবেছিলাম
আমিও একদিন বাঁশি বাজানো শিখবই
তারপর একদিন দাদু যে কেন চলে গেল
আমি কিছু বুঝতেই পারলাম না
তখন যে আমি রাঁধার প্রেমে পাগল
আজ আমার সুধা দাদুও নেই
আমিও আর বাঁশি বাজানো শিখতে পারলাম না
_________