শয়তান দাঁড়িয়ে আছে নগরের মাঝখানে,  
তার চোখে জ্বলছে অন্ধকারের শিখা।  
তুমি দেখছো?  
তার প্রতিটি হাসি যেন নখের আঁচড়ে  
ছিঁড়ে ফেলছে আকাশের নীল পৃষ্ঠা।  

সে হেসে ওঠে,  
যখন ধর্ষিতার রক্ত  
মাটি চুঁইয়ে পড়তে থাকে।  
সে জানে,  
এই রক্ত কোনো বিচার চায় না,  
শুধু ভরে দেয় রাজপথের ধুলো।  
আর তুমি, আমি?  
আমরা দাঁড়িয়ে দেখি,  
তার হাসির প্রতিধ্বনি  
পৃথিবীর সমস্ত দেয়ালে ছড়াতে থাকে।  

শয়তান হেসে ওঠে সংসদে,  
যেখানে প্রতিশ্রুতির ঝুড়ি ভরে তোলা হয়  
শুধু শূন্য শব্দে।  
তার হাসি শাসকের কানে যায়,  
আর কানে কানে বলে—  
"আরো করো, আরো লুট করো,  
প্রতিটি ভোট, প্রতিটি প্রাণ  
তোমার মুঠোয়।"  
আর শাসক সেই হাসি শোনে  
এক ছন্দময় রাজদ্রোহের সুরে।  

শয়তান হেসে ওঠে অর্থনীতির মঞ্চে,  
যেখানে মানুষের ঘাম মিশে যায়  
পুঁজির মুনাফায়।  
কৃষকের মৃতদেহ ঝুলে থাকে  
এক রিক্ত গাছে,  
আর সেই গাছের নিচে  
শয়তানের ছায়া।  

তার অট্টহাসি ক্রমশ জোরে ওঠে,  
যখন কবিদের কলম ভেঙে ফেলা হয়,  
যখন শিল্পীকে বলা হয়—  
"তুমি কথা বলবে না,  
তোমার রং শুধু শাসকের ইশারায় মিশবে।"  
সে হেসে ওঠে,  
যখন সত্যকে কবর দিয়ে  
তৈরি করা হয় মিথ্যার পাহাড়।  

শয়তান হেসে ওঠে প্রতিদিন,  
প্রতিটি রাত্রিতে, প্রতিটি প্রভাতে।  
আর তার হাসি গিলে খায়  
আমাদের স্বপ্ন, আমাদের সাহস।  
তবু কেউ কিছু বলে না,  
কারণ তার হাসি আমাদেরই আয়না,  
যেখানে আমরা দেখি  
আমাদের নিজের ভয়ের মুখ।  

কীভাবে থামাবে সেই অট্টহাসি?  
একটি সরকার, একটি শাসন?  
তারা তো শয়তানের প্রিয় সঙ্গী,  
তার হাসিরই কারিগর।  
তাই কবিতা লিখে লাভ নেই।  
তবু আমি লিখি—  
কারণ একদিন সেই হাসি থামবে।  
আর থামবে  
আমাদেরই হাতে,  
যেখানে চূর্ণ হবে তার কণ্ঠ।