একটি দেশ দাঁড়িয়ে আছে অদ্ভুত এক ব্যালেন্সে,
শীর্ষে বসে আছেন একা—
স্বৈরাচারের মুকুট পরে, হাসছেন তিনি,
কখনো মা, কখনো রাণী,
তবু আসল নাম চাপা থাকে গোপন পৃষ্ঠায়।
"উন্নয়ন" নামে গলায় বাঁধা সোনার শেকল,
রাস্তায় জমে থাকে হাজার লাশের স্মৃতি,
তবু শাসকের ভাষণে—
"সব ঠিকঠাক চলছে,
এটা তো উন্নয়নেরই দামে পাওয়া!"
তুমি যাকে মা বলো, সে তো কসাই,
গণতন্ত্রের গলা কেটে রেখে মঞ্চে নাচায় কাঠপুতুল।
ভোটের বাক্সে কি হাত রাখবে?
তোমার আঙুলে পারমানেন্ট মারকার পেনের
দাগ পরার আগেই
ফলাফল ছাপানো হয়ে গেছে!
বিচার এখন বোবা বালিকা,
যাকে রাস্তায় ফেলে টানতে টানতে নিয়ে যায়
ক্ষমতার কালো গাড়ি।
তোমার চোখের সামনে দিনের পর দিন,
মিথ্যার প্রদীপে জ্বালানো হয় সত্যের কবর।
বিদ্যুৎ নেই, পানির সংকট—
"সব ভালো হবে," বলে দিলেন হাসতে হাসতে,
কিন্তু যে ফাইভ স্টার হোটেলে
তিনি রাত কাটান,
সেখানে অন্ধকার কোনোদিন নামে না।
তোমার রক্তে কেনা ব্রিজের রেলিং,
তোমার ফসলের দামে নির্মিত সড়ক।
তোমার সন্তানদের মেধার পেটে
করে দেওয়া হয়েছে জমি।
তবু তুমি চুপ!
তুমি তাকিয়ে আছো, চেয়ে আছো—
"মা আছেন, সব ঠিক হবে।"
তুমি বলো, "আমাদের মা,"
কিন্তু সেই মায়ের কোলে
নয় তো দুধের পাত্র, বরং
লুটপাটের খোলাবাজার।
বিচার তো এখন বাজারের জিনিস—
তেলের দাম বাড়লে, সত্যও কিনতে হয়।
একটি মানুষ, একটি পরিবার, একটি শাসন—
গিলে খেয়েছে একটি দেশের সমস্ত চিৎকার।
তুমি কি বুঝতে পারো না?
তোমার ঘামে কেনা ভাতের থালা
তাদের ডাইনিং টেবিলের নিচে ফেলে রাখা হাড়।
তারা চিবিয়ে খায় তোমার স্বপ্ন,
তোমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ।
তুমি কি বলবে, "সব উন্নয়নের খাতিরে"?
তুমি কি জানো না,
এ উন্নয়ন এক মিথ্যা,
এ উন্নয়ন শেকলের রূপকথা।
তোমার পায়ের নীচে মাটি সরে গেছে,
তুমি শুধু দাঁড়িয়ে আছো অজান্তে।
তোমার সন্তান কারাগারে,
তোমার মা-বাবা হাসপাতালে,
তোমার স্বপ্ন মরেছে ভোটের রাতে।
তুমি যখন ভাত খুঁজে পাও না,
তারা তখন সেলফি তোলে বিমানবন্দরে।
মাঝে মাঝে মনে হয়,
এই শাসককে একদিন
নিজের নির্মিত রাজপ্রাসাদের দেয়ালেই
দম বন্ধ হয়ে মরতে হবে।
তখন সে চিৎকার করবে—
"গণতন্ত্র! মুক্তি!"
কিন্তু তার আওয়াজ পৌঁছাবে না,
যেমন আজ আমাদের কণ্ঠ পৌঁছায় না।
নম্রুত কিংবা
ক্যাথরিন নাইট দের এই সময়—
তোমার চোখে উন্নয়ন,
আমার চোখে নৈঃশব্দ্যের শাসন।
তুমি ভালোবেসো,
আমি ঘৃণা করি।