হে অন্ধ সভ্যতা!
তোমার নগ্ন রক্তাক্ত পাষাণদেয়ালে
আজও লেপ্টে আছে শিশুর নখের আঁচড়,
মায়ের স্তব্ধ চিৎকার,
বিচারের অনাহুত ঘুম!
কে খোঁজ রাখে?
পথের ধুলোয় লুটিয়ে পড়া স্বপ্নের খণ্ডচিত্রগুলো কে দেখে? রাত্রির গহ্বরে শিয়ালের উল্লাস,
মাংসাশী শকুনের ভোজনপর্ব!
তুমি কি জানো?
তোমার শহরের প্রতিটি শিরায়
বয়ে চলেছে প্রতারণার বিষাক্ত শিরস্রোত,
তোমার আদালতে ন্যায় শুধু রূপকথা,
তোমার সংবিধানে ন্যায়বিচার মৃত শব্দ!
শোনো, হে সভ্যতার দাম্ভিক দানবেরা!
রক্তের ঘ্রাণ চিরস্থায়ী হয়,
লুপ্ত হয় না নৃশংসতার ইতিহাস,
অভিশপ্ত হয় সূর্য,
কালো মেঘে ঢাকা পড়ে সুবাসিত ভোর!
রাহুগ্রস্ত এই সমাজ,
যেখানে মাতৃত্বের করুণ বিলাপ
শুধু বাতাসে বিলীন হয়ে যায়,
যেখানে ধর্ষিতার লাশ
বিচারের সিঁড়িতেই শুয়ে থাকে
চিরনিদ্রায়!
আমরা দেখেছি,
খুনিদের মুখে ন্যায়বাদের ভাষণ,
প্রতারকদের হাতে নীতির পতাকা,
আমরা দেখেছি,
নিপীড়কের রাজপ্রাসাদে সুবিচারের নীল রক্তধারা!
কিন্তু মনে রেখো,
এই ধুলো-মাটি রক্ত চেনে,
এই বাতাস কান্নার ভাষা বোঝে,
একদিন প্রতিটি রক্তবিন্দু পরিণত হবে দাবানলে,
যে আগুনে দগ্ধ হবে সব পাষাণ দেয়াল,
সব নিপীড়কের অহংকার,
সব অন্যায়ের রক্তচিহ্ন!
তখন আর থাকবে না তোমার শকুনের সাম্রাজ্য,
থাকবে না প্রাসাদের দাম্ভিক প্রবেশদ্বার,
শুধু এক প্রলয় ডেকে আনবে
নির্যাতিত জনতার জ্বলন্ত উচ্চারণ— “
আমরা হারি না!
আমরা থামি না!
আমরা জাগবো!”