যৌনতা, ধর্ষণ, রাজনীতি, অর্থনীতি—
এই চার প্রবাহে জুড়ে আছে
আমাদের নগরীর শিরা-উপশিরা,
যেখানে জীবন শুধু এক ছায়া,
আর শাসন হলো নীরব দংশন।
যৌনতা,
তুমি প্রথমে এলে আশীর্বাদ হয়ে,
জন্মের উৎস, ভালোবাসার আলোকশিখা।
তবে সেই আলো কখন যেন
নেমে আসে নিকষ অন্ধকারে।
তুমি হয়ে যাও পণ্যের মতো,
বাজারের হাত বদল।
আর এখানেই ঢুকে পড়ে রাজনীতি,
শরীরের অধিকারকে মোড়ানো হয় আইন আর ধর্মে,
যেখানে স্বাধীনতা শব্দটি চুপচাপ বসে থাকে।
ধর্ষণ,
তুমি যৌনতার বিবর্তন নও,
তুমি ক্ষমতার এক নিঃশব্দ চিৎকার।
এক দেহ ভেঙে তুমি প্রমাণ করো
শাসকের অমানবিক দম্ভ।
তুমি জানো, ন্যায়বিচার কাগজের ওপর জমে থাকা
ধুলোর মতো;
যা মুছে দেয় ক্ষমতার মোটা আঙুল।
এখানে রাজনীতি তোমাকে হাতিয়ার বানায়,
তোমার ক্ষতকে ব্যবহার করে
মঞ্চে বাজায় মিথ্যার ঢাক।
রাজনীতি,
তোমার চরিত্র বহুরূপী।
তুমি কখনো ত্রাণদাতা,
কখনো দস্যু।
তুমি ধর্ষকের পিঠে হাত রাখো,
অথবা অর্থনীতির বাঁকে বাঁকে
গড়ে তোলো শক্তির অট্টালিকা।
তোমার প্রতিটি পদক্ষেপ যেন
এক নতুন নাটকের আয়োজন,
যেখানে দর্শক আমরা—
বঞ্চিত, নতজানু।
অর্থনীতি,
তুমি এই সবকিছুর নীরব কারিগর।
তোমার চাকা ঘোরে,
তবু কত মানুষ পড়ে থাকে
তোমার পথে নিষ্পেষিত।
তুমি কৃষকের শস্য নিয়ে তৈরি করো
বিলাসী পণ্যের কাহিনী।
তুমি যৌনতাকে বিক্রি করো,
ধর্ষণকে নীরবে সহো,
আর রাজনীতিকে পরিণত করো
অর্থের দাসে।
এই চার কাহিনী একত্রে মিলে
নগরীর রক্তস্রোত,
যেখানে প্রতিটি মোড়,
প্রতিটি দরজা,
একটি নতুন প্রশ্ন ফেলে যায়।
আমরা জানি,
এই স্রোতে ভেসে চলেছি,
তবু কোথাও ভেতরে বেঁচে আছে
একটি চিৎকার,
একটি আশা,
যা ভাঙতে চায় এই শিকল।
তুমি কি শোনো সেই চিৎকার?
নাকি তুমি হয়ে গেছ
নগরীর আরেক প্রাচীর?