না বলা কথা
—উৎপল নরেন্দ্র মাইতি
যেদিন তোমায় প্রথম দেখলাম
একটু একটু করে স্বপ্নের জাল বোনা শুরু সেদিন থেকেই !
কল্পনায় ভর করে দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল বেশ ;
বুঝতেই পারিনি কখন যে মন দিয়ে ফেললাম নিজের অজান্তেই !
কতো কথা ছিল মনে ! ছিল কতো স্বপ্ন… কতো আশা !
“আমি তোমাকে ভালোবাসি রাহুল !
হ্যাঁ, শুধু তোমাকেই ভালোবাসি !”…
লজ্জাকে ভূষণ ভেবে কোনোদিন বলতে পারিনি,
মনের কথা মনেই রয়ে গেল চাপা !
বন্ধুরা মিলে তোমাদের বাড়ি গেলাম যেদিন
অনেক কথা হলো, এ-কথা সে-কথা...
শুধু মনের কথাটি রয়ে গেল হৃদয় গভীরেই গাঁথা ।
সাহস করে বলতে পেরেছিলাম শুধুই—
“রাহুল, তোমায় না একটা কথা বলার আছে”, ব্যাস ওটুকুই ।
“কী কথা” তুমি জানতে চেয়েছিলে,
নিশ্চিৎ ছিলাম তুমি রাজি হবে, তবু মনে ছিল ভয় !
যদি প্রত্যাখ্যাত হই, যদি আর কোনোদিন দেখা না হয় !
“আজ থাক, পরে কখনও বলবো সময় করে ।”
বাড়ি ফিরে এলাম শুধু এইটুকু বলে ।
দেখতে দেখতে কেটে গেল বেশ কয়েকটা মাস ।
হঠাৎ এক বিকেলে আমাদের বাড়ি এলে তুমি,
তোমাকে দেখে হৃদয়ে যেন তীব্র জলোচ্ছ্বাস !
না-বলা কথা বলার জন্য কেবলই ছটফটানি
কেমন করে যে তোমায় কথাটা বলি !…..
অনেক চেষ্টা করেও আজও পারলাম না বলতে !
বলতামই বা কেমন করে, মরমে একেবারে মরে যাচ্ছিলাম যে !
বেলা যেই পড়ে এলো সূর্য যখন যাচ্ছে অস্তাচলে
আমার অপোক্ত হাতের রান্না খেয়ে উঠলে তুমি বাড়ি ফিরবে বলে ।
পথের দিকে চেয়ে রইলাম একদৃষ্টিতে একটিবারও পলক না ফেলে ।
গলাটা ভীষণ শুকিয়ে আসছিল, বুকটা যাচ্ছিল ফেটে
দু’চোখে জল টলমল ডুকরে উঠলাম কেঁদে !
হাত বাড়ালাম যদি একটিবার ফিরে দেখো চেয়ে
একছুট্টে দৌড়ে গিয়ে ধরবো তোমায় জড়িয়ে
বলবো না-বলা কথা, ঘুচবে যত অন্তরে জমা ব্যথা !
দূর থেকে দেখলাম ঝাপসা দু’চোখে অদৃশ্য হলে তুমি
একটু একটু করে... একটিবারও পিছন ফিরে না দেখে !
পাথর হয়ে রইলাম দাঁড়িয়ে বুকে নিয়ে একরাশ অসহনীয় ব্যথা !
হৃদয় গভীরে শুকিয়ে মরে যত…মনের না বলা কথা !
হৃদয় গভীরে… শুকিয়ে মরে যত… মনের না বলা… কথা !
*******