সেদিন আমি কবি গুরুর-
সেই 'মােহ' কবিতাটি নিঃশব্দে পড়ছিলাম।
"এ মােহ ক’দিন থাকে, এ মায়া মিলায়,
কিছুতে পারে না আর বাঁধিয়া রাখিতে"।
চোখ সবে, এ দুটি চরণ স্পর্শ করেছিল-
হঠাৎ মধ্যাকাশে বেজে উঠল তুমুল বজ্রপাত,
বর্ষাকাল নয়, তবুও আকাশ নির্ঝরের মতোই
যেন ভেঙে পড়ছে শূন্যতার ওপর।
মা তখন বাইরে যেতে বারংবার নিষেধ করেছিল
তবুও আমি দরজার সম্মুখে দাঁড়িয়ে দেখছি-
এক মায়া মােহ আমাকে করছে আহ্বান।
আমাকে প্রদর্শন করাে হে প্রিয়, আমি সেই নক্ষত্র
আমি অন্ধকারে উজ্জ্বল,
আরও একটু অন্ধকার আমায় এনে দাও।
সে ডাক যে ছিল ভীষণ মায়াবী।
তাই শত নিষেধ সেদিন উপেক্ষা করে-
আমি গ্রাহ্য করেছিলাম মরণ।
সেদিন কবিগুরুর মত আমিও উচ্চ কণ্ঠে বলেছিলাম
'আকুল রাধা রিঝ অতি জরজর
ঝরই নয়ন দউ অনুখন ঝরঝর,
তুঁহুঁ মম মাধব, তুঁহুঁ মম দোসর
তুঁহুঁ মম তাপ ঘুচাও,
মরণ তু আওরে আও'।
কিন্তু মরণ আসেনি সেদিন এসেছিল যন্ত্রণা
আকাশের কান্নায় কয়েকটি জলবিন্দু পড়েছিল আমার বুকে
যন্ত্রণার তাড়নায় তখন শরীর থেকে হৃদয় করেছি ভিন্ন।
তারপর আকাশ শান্ত হলে আমি বুঝতে পারি-
অবজ্ঞায় আমি নিজেকে করেছিলাম আত্মাহুতি।