শিক্ষক তিনি, ডাক্তার তিনি,
এক হাজার মাইল দূরে থেকেও
সর্বক্ষণই পাশে থাকা একমাত্র যে কল্যাণকামী,
বলতে পারেন বলছি আমি কার কথা?
তিনি হলেন মা।
জন্মের পরে একটি দু’টি শব্দ করে
শিখিয়েছেন প্রথম বানী।
আম জাম আর কাঁঠাল লিচু,
চড়ুই দোয়েল ময়না শালিক,
গোলাপ গাঁদা শিউলি জবা
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা,
এসব কি আর জানতাম কিছু?
ঝর্ণা নদী সমুদ্র আর সবুজ পাহাড়,
বসন্ত শীত গ্রীষ্ম বর্ষা শরত হেমন্তেরও বাহার,
তিনিই প্রথম সব শেখালেন,
কোনোদিনই হয়নি যে তাঁর একটুখানি ধৈর্যচ্যুতি,
বলতে পারেন বলছি আমি কার কথা?
তিনি হলেন মা।
পেয়েছি তাঁর স্নেহছায়া সর্বক্ষণই,
হাঁটতে গিয়ে কতবারই গেছি পরে,
প্রত্যেকবারই তুলে নিয়ে দু’হাত ধরে,
আমার মনে উৎসাহ আর সাহস দিয়ে,
শিখিয়েছেন কেমন করে হাঁটতে হবে,
রাস্তা খুবই সরু কিম্বা যতই পিচ্ছিল হোক,
বলেছিলেন সামনে যেতে শিরদাঁড়াটি উঁচু করে,
বলতে পারেন বলছি আমি কার কথা?
তিনি হলেন মা।
মাঝে মাঝে হঠাত যদি জ্বর হয়ে যায়,
আমার মাথায় হাতটি রেখেই বুঝতে পারেন কি হয়েছে,
কত ফলের রস মিশিয়ে, জল মিশিয়ে, ওষুধ তিনি খেতে দিতেন,
পরের দিনই একশো দুইয়ের গায়ের তাপও তার ভয়ে কই পালিয়ে যেত!
মাঝে মাঝে পাড়ার ছেলের সংগে কোনো বিবাদ হলে,
নয়তো হঠাত অকারণেই মনটি খারাপ হয়ে গেলে,
তখন তিনি হয়ে যেতেন মনোরোগের চিকিৎসকও,
দূর থেকেও বুঝতে পারেন আমার মনে কি হয়েছে,
বলতেন কতো গল্প হাঁসির,
এক নিমিষেই মনটি ভালো হয়ে যেত।
বলতে পারেন বলছি আমি কার কথা?
তিনি হলেন মা।
বছর শেষে বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়,
আমার চেয়েও ব্যাস্ত তখন মায়ের হৃদয়,
কতো খাবার, প্রার্থনা আর, উদ্দীপনায় সাহস যোগায়,
পাশ হলে তো আমার চেয়ে তিনিই বেশী খুশী হতেন, কারণ
তিনি হলেন মা।