মেয়েটি সাঁজতে খুব ভালোবাসতো।
ছয় কি সাত বছর বয়স থেকেই,
পায়ে নূপুর, হাতে মেহেন্দি লাগিয়ে ঘুরে বেড়াতো।
পাড়ার দিদিরা তাঁর কপালে যখন –
একটি তারার লাল টিপ এঁকে দিতো –
ছুটে গিয়ে সে দাঁড়াত বাবার সামনে।
হাতের সব কাজ ফেলে বাবা বলতেন –
“আকাশের এই পরীটি কি ভুল করে এসে গেছে আমাদের ঘরে?”
এই কথা শুনে মুখ লাল করে ছুটে যেত সে খেলতে আবার বন্ধুদের সাথে।
স্কুলের বৈশাখী উৎসবে একবার হলুদ শাড়ী পরে নৃত্য প্রতিযোগিতায়-
জিতেছিল প্রথম পুরস্কারও,
এর পর এক সপ্তাহ সে শাড়ি ছাড়া অন্য কোন পোশাক পরে নি ।
তাঁর পিসি বেড়াতে এসে বলেছিল- “এটা কার ঘরের নয়া বৌ গো?”
একথা শুনে মায়ের কোলে মুখ ঢেকে সে বলেছিল,
“পিসি নয়া বৌ, আমি না! ”
আজ তাঁর নিথর দেহ শুয়ে আছে বালু শয্যায় ।
সাগরের ঢেউ তাঁর সিঁদুরের শেষ চিহ্নটুকু মুছে দেয় ধীরে ধীরে।
শৈশবের পুরনো কথা কি ভুলে গেছে মেয়ে?
এতো উদাসীন সে কি করে হলো তাঁর সাজে!
সাদা শাড়িটির একটি প্রান্ত বাতাসে উড়ে উড়ে –
বলছে কি তাঁর শেষ কোনো বিজয়ের কথা?
(জানুয়ারি ৭, ২০২১ )