পতাকা উড়ছে,
পতাকা উড়ছে,
পতাকা উড়ছে।।
পতাকা উড়ে চলেছে তার নির্দিষ্ট গতিতে।
যে পতাকার জন্যে শহীদ হয়েছিল ৩০ লক্ষ মা-বোন ভাই-পিতা!
যে পতাকা রক্ষার জন্যে লড়াই করছে তারো অধিক জনসমুদ্র!
সেই পতাকা উড়ছে।

-কেমন লাগছে উড়তে?
"বেশ।"
-চরম গরম আবহাওয়াতে উড়ছো, পুড়ে যাচ্ছো না!
"কোই না তো। এত এত শহীদের ভীড়ে উলটো ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছি। কিন্তু পুড়ছি না। বরং নতুন উদ্যমে জাগ্রত হচ্ছি, জাগ্রত করাচ্ছি।"
-আচ্ছা বেশ। তোমার বয়স কত হয়েছে বলতে পারো?
"প্র‍্যাক্টিক্যালি হয়তো আমার অনেকখানিই বয়স বেড়েছে, কিন্তু তাত্ত্বিকভাবে এখনো আমার জন্মই হয়নি। এখনো আমি মাতৃগর্ভে শায়িত। মিসক্যারিজ হবে নাকি নতুন জন্ম নেবো বুঝতে পারছি না।"
-ভয় লাগছে কি?
"নাহ। এক অদ্ভুত মনের জোড় কাজ করছে। সংস্করণের এই যাত্রায় নিজেকে আবিষ্কার করছি। ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করছি, কিভাবে দেশটাকে সাজাবো।"
-কিভাবে সাজাবে?
"যেভাবে সাজালে আলোকিত হয়ে উঠবে পুরো দেশ। সারা বিশ্বে রাণীর তকমায় আলোড়িত হবো আমি! সেভাবে।"
-জন্ম নেওয়ার আগেই নিজেকে রাণী ভাবছো?
"হ্যাঁ ভাবছিই তো। শুনেছি ভবিষ্যৎকে তুমি যত বেশি স্বপ্নের মাধ্যমে কল্পনা করবে, তত দ্রুত সত্য হবে তোমার কল্পনা। আর আমি এটা বিশ্বাসও করি। আমি এও বিশ্বাস করি, এমন দেশটি আর কখনো খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে আমার মতো রাণী নেই। নেই জন্মভূমি।"
-হুম বুঝলাম।
"কি বুঝলে?"
-বুঝলাম এটাই তুমি শুধু পতাকা নও। তুমি আমার জন্মভূমি। যে জন্মভূমির জন্য যুদ্ধ করেছে অস্ত্র দিয়ে কিন্তু রক্ষা করছে অস্ত্র ছাড়া। একটা কথা কি জানো? স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন, কথাটি আসলে ভুল। দুটো আসলে সমান কাজই। দুটোর জন্যই শ্রম যায়, মেধা যায়, বুদ্ধি যায়, রক্ত যায়, আর হাহাকার হয় প্রতিটি মায়ের কোল।
"ঠিক বলেছো তুমি। আর তাই আমি উড়বো। সারাক্ষণ উড়েই যাবো। যেভাবে উড়ে যাচ্ছে পাখি সেভাবে আমি উড়বো সারাদিন, সারারাত, সারাবছর, সারাজীবন।"
-পরের জন্মে আমি পতাকা হয়ে জন্মাবো। স্বাধীন পতাকা।


2024-07-30