কি বুঝবে তোমরা কবির যন্ত্রণা
মাত্র দশমাস দশদিনের প্রসব বেদনা
আর তার জন্য কত আয়োজন।
ইউরিন টেষ্ট-পজিটিভ-ডাক্তার-ওষুধ-বেডরেষ্ট
আলট্রাসোনোগ্রাফি-এক্স রে
এম্বুলেন্স্-নার্সিং হোম
সিজার-ড্রেসিং-পরিচর্যা।
আমরা যে শতাব্দীর পর শতাব্দী
বয়ে বেড়াই কবিতার ভ্রূণ।
মনের জড়ায়ুতে ঠেসাঠেসি ভিড়।
উন্মুক্ত খাতার পাতায়
একে একে ভুমিষ্ঠ হয়-
কিছু জন্মেই হাত পা ছুঁড়ে করে প্রতিবাদ
কিছু বড় দূর্বল-পঙ্গু,
তবু মা কবির বড় আদরের তারা সব।
কিছু ঢেকে যায় মৃত্যু কুয়াশায়
মা কবির চোখে নামে বর্ষা।
এসবের মধ্যেও মা কবির জড়ায়ুতে
ভ্রূণেদের ঠেসাঠেসি ভিড়।
বাজুক যুদ্ধের দামামা
ফাঁক হয়ে যাক পৃথিবীর শরীর
ভেঙে পড়ুক ওয়ার্ল্ডট্রেড সেন্টার
ধেয়ে আসুক টর্নেডো, সুনামি, আয়লা
মহামারী, বিক্ষোভ ,সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা,
পাশের বাড়ি থেকে বিক্রি হয়ে যাক মা বোনেরা
ভিড় বাড়াক দেশ বিদেশের পতিতাপল্লীর ঘরে
পণের দায়ে পুড়ে মরুক নিরুপমারা
লাইনে গলা দিক সমাজবিরোধী ধর্মবিরোধী প্রেম
চলুক লাঠি, গুলি, কাঁদানে গ্যাস
হোক জমি দখল, পুকুর দখল, মাছের ভেড়ি দখল
পরের বউ দখল, স্বাধীনতা দখল।
ভাঙচুর হোক পার্টি অফিস, বিধানসভা, লোকসভা-
যতই লাল সতর্কতা জারি হোক নদী উপকূলে, সমুদ্র উপকূলে
আগুন লাগুক মানবিকতার ঘরে
স্টিফেন কোর্টে,প্লাস্টিক কারখানায়,গুদামে
আকাশের গায়, সাবমেরিনে,সবুজ ধানে, কিশোর মনে
গাড়ির চাকায় পিষ্ট হোক স্কুলফেরত ছাত্রী,
ঋণের ভারে টালমাটাল বাড়ির কর্তা।
পঙ্গু হয়ে যাক প্রজন্মের পর প্রজন্ম
পারমাণবিক বোমায়, ভেজাল, মিথ্যা,ব্যাভিচার
আর মদ, গাঁজা, হেরোইন্, মোবাইল ফোনে।
বিক্রি হয়ে যাক মায়ের স্নেহ , বাবার পরিচয়, আকাশের চাঁদ।
ভেসে যাক, তলিয়ে যাক্,হারিয়ে যাক, ফুরিয়ে যাক সব।
তবু এ বিশ্বের কোনো কোণায়
কবিরা জন্মনিয়ন্ত্রণ করবে না।