ভুলিনি তোমায়
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
খোলো-খোলো, দ্বার খোলো,
শান্ত করো হে হৃদয়!
রূপ-লাবণ্যে অনন্য তুমি
চেয়ে আছি আমি,
সহসা অভ্র-অন্তরে জমে যায়-
সেজেছো শ্যামরায়।
খোলো-খোলো, দ্বার খোলো
শান্ত করো হে হৃদয়।
অকারণে অমন আঁখির তরে
অশ্রু ঝরে,
অমৃত ভেবে পান করে -
পিপাসিত প্রাণ;
পুষ্প হেসে গন্ধ ছড়ায় বাতাসে
করি তার অনুসন্ধান।
বিরহ বুকে বহ্নি জ্বলে তব অশ্রু জলে
নিভবে কি?
আজ খুঁজবো কোথায়
কোন ঠিকানায়,
মিলবে দেখা-কথা বলবে কি?
ওই আঁধারে আজ স্তব্ধ নীল যবনিকা
অন্তরিক্ষে ডুবেছে রবি রেখা,
আমি কোন পথে যাবো
কোথায় পাবো?
বন মাঝে পান্থ সাজে আছি একা।
এই দুর্যোগ দিনে প্রেম জাগে প্রাণে
নীলাঞ্জনা জ্বলছে গগনে-
ক্ষণে-ক্ষণে,
কি করে খুঁজি থেমেছি আজি
ব্যাকুল বুকে বাঁধা চরণে।
এই দুর্যোগ দিনে।।
হে-বন্ধু,অসহায় মন থাকেনা ঘরে
প্রাণ সঁপেছি তোমার তরে-
আজ প্রেমের দুয়ার খুলবে কি?
স্মৃতিরা সব বিচলিত অন্তর হলো ক্ষত
তোমায় ছাড়া প্রাণ বাঁচবে কি?
একদিন এসেছিলে ভালবেসেছিলে
রজনীগন্ধা বনে রজনীতে,
সেদিন চাঁদ উঠেছিল বাঁশি বেজেছিল
জেগেছিল প্রেম নূপুরধ্বনিতে।
অনন্ত পথে হেঁটেছিলে সাথে
পায়ে পা মিলিয়ে,
কনিষ্ঠ ধরে ফাগুন হাওয়ায়
দুলিয়ে হৃদয় সঙ্গে নিয়ে -
প্রেমে প্রাণ ভরিয়ে।
তবে কোথায় গেলে আমায় ভুলে
দিগন্তের ওই রংধনুতে রং মেলেনা,
ডুবেছে সলিলে পদচিহ্ন নিতলে
অতীত বসন্ত আর আসেনা।
ভেবেছিলুম যাবো তারে ভুলে
স্মরণ করবো না অশ্রুজলে,
তবু মনে পড়ে গহীন রাতের ভিড়ে
মধুর কল্পনায় শুয়ে আছি তার কোলে।
আজ আরো শুনি
পুরাতন সেই নূপুরের ধ্বনি,
বাদলের গানে তুলেছে রাগিণী
তৃষিত প্রাণে;
ঝরা ফুলের স্মিত হাসি
বেজে ওঠে বাঁশি
আকুল প্রেমে এই বনে।
হে বন্ধু, একবার দাও দেখা
করি তোমার অপেক্ষা
যুগ-যুগ ধরে!
এমনি ঝর্ণা ঝরা দিনে
পড়ছে মনে
তোমার সুগন্ধ খোঁজে অন্তরে।
এত স্মৃতি এত প্রীতি
কি করে গেলে সব ভুলে?
এই দিন আবারো হোক রঙিন
নতুন ফুলে -ফুলে।
আজ যে বুকেতে জমেছে ব্যথা
আরো বিরহ জমে থাক,
তুমি থেকো অনেক ভালো
এসেছে আমার বিদায়ের ডাক।
হে বন্ধু তোমারই আত্মবিস্মৃত
যদি না ভেঙে যেতো,
তবে বিষাক্ত সর্প রাজ্য হত কি?
মরণ আমন্ত্রণে লুণ্ঠিত বনে
নির্জনে থাকা লাগতো কি?
আজও তোমায় নিয়ে পায়ে পা মিলিয়ে
হারিয়ে যেতাম ওই দিগন্তে,
গোধূলির আলো আঁচলে মেখে
চোখে চোখ রাখে রঞ্জিত হতাম রঙেতে।
কত অরণ্যে, অর্ণবে,অটলে,খুঁজেছি
প্রেম হারানোর যাতনা বুঝেছি,
শুধু অন্তরে অপূর্ণতা!
অসম্পন্ন কাব্য গ্রন্থ হলো ক্ষান্ত
ফিরে আসেনা কবিতা।
এভাবে চলে যাবে ভাবিনি আমি
ফুলের কুঁড়ি হয়ে থাকবে চেয়ে
আগে কেন বলনি তুমি?
এই ছিল তোমার মনে
হৃদয় নিয়ে মিছে খেলা ভান,
আজ প্রেমের গ্রন্থ থেকে নেবো অবসান
করেছি বিরহ বিষ পান।
খোলো-খোলো, দ্বার খোলো,
শান্ত করো হে হৃদয়!
জলধারা ঝরিও না আর হৃদয়ে রেখো আমার
রেখেছি তারে অমর ভালোবাসায়।
একদিন বৈশাখে ধূলিকণা মেখে
যাবো ছুঁয়ে তার চরণ খানি
হয়ে লুণ্ঠিত হবো দলিত
হে বন্ধু, আমি তোমায় ভুলিনি।
✍উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল- ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সাল
বাংলা- ২০ মাঘ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ (মঙ্গলবার)
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।