বৈধব্য
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
আজ আমি কেন এত কাঁদি, এ-কান্নার শেষ হবে কবে?
প্রাণনাথ যায় চলে বিদায় নিয়ে অশ্রু জলে,
হারালে অন্তরালে আজ আমায় কে সঙ্গ দেবে?
তাই লুটিয়ে পড়ে চরণ ধরি আকুল মনে মিনতি করি
চোখে আমার ঝরে বারি যেওনা ফেলে,
তোমায় রেখেছি জড়িয়ে হৃদয় কমলে -
চরণ তলে দাও গো ঠাই
যে প্রাণ পেয়েছ দানে সে দান ফেলে যেওনা বনে
হে-প্রিয় নিও না বিদায়।
তবুও আঁধার নেমে আসে আঁখিতে
বেলা অস্ত গেলো সুদূর দিগন্তে,
প্রিয় পড়লো ঘুমিয়ে পরম শান্তিতে-
মাথা রেখে কোলে
ওগো তুমি যে মৃত্যুঞ্জয় কে বলে নিয়েছে বিদায়
আমি রেখেছি তারে বেধে আঁচলে।
আজ আমি তোমারে যেতে দেবো না
ধরেছি যে চরণ ছাড়বো না
জেগেছে প্রাণে বেদনা তোমার অভিমানে,
অনন্ত কালের আমাদের প্রেম
প্রাণ নিয়ে প্রাণ দিলাম
সঙ্গ দিলাম সাজিয়েছি কুঞ্জ বনে দুজনে।
তবে আজ কেন গেলে ছেড়ে হারালে আঁধারের ভিড়ে
ভুলে গেলে সব স্মৃতি,
ভেঙেছে তোমার-আমার প্রীতি -
ওরা সাজিয়েছে তোমায় ফুলসজ্জায়
রাঙিয়ে চন্দনে দিয়েছে আলতা চরণে
তুলসী দিয়ে নয়নে শরীরে হলুদ লাগায়।
কি বলে আজ দেবো বিদায় অশ্রু জমে পূজার থালায়
প্রদীপ নিভে যায় বিরহ ঝড়ে,
ওগো তুমি যেওনা ছেড়ে-
তবুও সে যায় চলে
নিয়ে মুখাগ্নি রাঙিয়ে ধরণী
অস্তি হয়ে যায় ভেসে গঙ্গা জলে।
এখন আমার দিবস রজনী যায় বিরহ বেদনায়
নিরুপায় প্রাণ ডানা ঝাপটায় পথে পড়ে গো,
সেতো আসবে না ফিরে দেবে না দান আঁচল ভরে
শুধু স্মৃতি বুকে ধরে আমার জনম গেলো গো।
হয়ে আছি ঋণী আমি ভুলিনি
ভুলবো না তোমারে,
আজ আছি স্বজন শূন্য সংসারে-
দণ্ড দিয়েছ আমারে হয়েছি পতিহীনা,
কে বুঝবে আমার বেদনা?
আজ আশায়-আশায় দিন চলে যায়
জনমে-জনমে পাই যেন তোমায়,
হে-নাথ নিও না বিদায় করো করুণা।
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল ২১ জুন ২০১৯ সাল
বাংলা - ৫ আষাঢ় ১৪২৬ বঙ্গাব্দ (শুক্রবার)
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।