সর্বহারা
✍- উজ্জ্বল সরদার আর্য
আজ এক সাথে গুরু-গম্ভীর রাতে
দিতে হবে পাড়ি ওই দিগন্তে,
সকল বাঁধা পেরিয়ে দাও মুক্ত আলো ছড়িয়ে,
আমি লিখবো কবিতা রক্তে।
উঠেছে সাইক্লোন, উত্তল তরঙ্গ’ গর্জিত গগন,
স্রোতে শৈল পড়ছে ভেঙে অকূলে
সলিল উঠেছে ফুলে কূলে-কূলে
রূপ তার ভৈরবী, আমি রক্তিম রবি,
ওরে তোরা আয় স্বাধীন চেতনায় ছুটে যাই
লহরী দোলায়-দুলে।
যুগ-যুগ ধরে তৃষিত অন্তরে
ছিল যতো সঞ্চিত ব্যথা,
আজ ক্রন্দনে অশ্রু আনে
পথ বাসি প্রাণে বাজে সে কথা।
রাজ পেয়াদা পিটিয়েছে পিঠে কত
নায়েব ঘরে আগুন জ্বালাতে রত,
ভিটেমাটি ফসলে পরিপাটি
নিয়েছে সব কেড়ে করেছে বঞ্চিত।
এ-যুগে যার আছে যত দিগুণ চায় সে তত
ক্ষমতা বল দেখায় প্রতিনিয়ত,
বেঁচে থাকার ইচ্ছায় ওদের সেবা করে যাই
দাস-দাসী হয়ে থাকি মৌনব্রত।
তবু-মন ভরে না,কেড়েছে কত প্রাণ
বুকে গুলি বর্ষণ,করে রক্ত পান!
আরো মিথ্যা ঋণে ক্ষণে-ক্ষণে
কত জোড়ায়,
ফাঁসিতে ঝোলায় -
সৈন্যসামন্তরা দেয় গর্দান।
রাজার হুকুম করেছে গুম
কত সুন্দরী নারী,
নর্তকী সজ্জায় রঙমহলে নাচায়
ওরা মদ্যপানকারী-
আমার ঝরে আঁখিতে বারি
দেখি সারি-সারি লাশ,
কেউ মরেছে রাতের অন্ধকারে
ভয়াবহ বলাৎকারে
করুণ হৃদয় বেদনায় করে হাহুতাশ।
তাই স্বজন হারা বেদনা বুকে
হে বীর! আজ ডেকেছি তোমাকে
ক্ষত হৃদয়ে জ্বলছে দহন,
শৃঙ্খলে বেঁধে রাখে আমাকে সর্বক্ষণ -
সম্মুখে রেখে তারে বক্ষ চিরে
করেছে রক্ত পান
মিটিয়েছে যৌন তৃষা, বাতাসে লাশ পচা ঘ্রাণ।
ওরে কতদিন দেখবো আর অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল?
হে-বীর হও এবার চল-চঞ্চল,
ভীরু-ভিতু-দুর্বল ললাটে যত ফের
রক্তাক্ত কাপড় সরালে
যত চেনা মুখ ক্ষত দেহ হয় বের-
এখনো শৃঙ্খল পরানো আমার দেহে!
এবার বন্দি জেলে উঠবো জ্বলে
উঠবো রুষে রুদ্র দ্রোহে।
রচনাকাল - ২২ আগস্ট ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ
বাংলা- ৫ ভাদ্র ১৪২৬ বঙ্গাব্দ (বৃহস্পতিবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।