শান্ত নদী
  ✍️-উজ্জ্বল সরদার আর্য

      এখনো সূর্য অস্তমিত হইনি পাখিরা
      আসেনি ফিরে ঘরে,
      এখনো ভোরের ফুল ফুটে আছে
      বেলা শেষে শুকিয়ে যাইনি ঝরে।
      তবু কেন বলছো বাতাসে সুগন্ধ নেই
      স্পর্শে শিহরণ নেই হৃদয়ে?
      এখনো কপোত-কপোতী জোড় বেঁধে
      আছে ভালোবেসে চুমু খায় ঠোঁট ছুঁয়ে।

      এখনো মাধবী লতা রৌদ্র উত্তাপে
      শুকিয়ে যাইনি,পৃথিবী হয়নি মরু উত্তপ্ত!
      এখনো গোধূলির আঁচল ছায়ায় খেলছে
      শৈশব, পুতুলের বিয়েতে মন উন্মত্ত।
      তবু কেন বুকের উপর বুক রেখে তুমি
      আকুল উষ্ণতা খুঁজে পাওনি?
      পাহাড়ের ঠোঁট ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়া ঝর্ণা
      এখনো প্লাবন আনে
      এখনো নদী সাগর খোঁজে দু-নয়নে
      জোয়ারের জলে কেন আমায় ভাসাওনি?

       এখনো ঝড় ওঠে প্রকৃতির বুকে
       বাতাসে দোল খায় কবরী খোলা চুল,
       সুগন্ধে কাছে টানে শরীরে শিহরণ আনে
       এখনো তুমি যৌবনা নও ঝরা ফুল।
       উত্তপ্ত বৈশাখে শুধু খোলস শুকিয়েছে
       ভাটায় জল কমে তবু নদীর হয় না মৃত্যু,
       দুহাতে খুঁড়লে দ্বীপ নিচ থেকে ওঠে জল
       উপত্যকা ছাপিয়ে আসুক বর্ষা ঋতু-
       দিনভর স্নাত হোক ভরা যৌবনকাল।

       এখনো প্রিয়তমা তুমি নও বিদায় বিকেল
       হাত ধরে দিগন্তে হেটে যাও রোজ,
       এখনো ভালোবাসা খোঁজে অবুঝ রাত্রি
       চুম্বনে গাত্র ভেজায় বুকের উষ্ণতা করে খোঁজ।
       এখনো পলাশ শিমুল কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে
       পারুল বনে পাতার ফাঁকে সূর্য দিচ্ছে উঁকি,
       এখনো কাব্য লেখা হয়নি শেষ
       শেষের কবিতায় করিনি সাক্ষর
       ওগো তুমি যেওনা চলে আমায় দিওনা ফাঁকি।
    
       এখনো কেন শান্ত নদীর মত তুমি
       তোমার উচ্ছ্বাস উচ্ছল তরঙ্গে উঠুক ঢেউ,
       এখনো কেন দীপ নিভে আছে আঁখি খোলো
       কাজলে আঁকি আলপনা কিছু তো বলো কেউ।
       আজ চারিধার উপচে পড়া জনতার ভিড়
       গলা ভাঙা কান্না-চিৎকারে উন্মত্ত কাল সন্ধ্যা,
       ঝরা ফুল হাতে নিয়ে প্রেমের আদরে সাজিয়ে
       এখনো আমি খুঁজি স্মৃতিময় সুরভি রজনীগন্ধা।

রচনাকাল, ৩১ মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার।
দাকোপ খুলনা,বাংলাদেশ।