রক্তাক্ত কবিতা
   ✍- উজ্জ্বল সরদার আর্য

যুগ বদলের দিনে মায়ের চরণে রক্ত দাও হে ঢেলে,
হে বীর অধীর অপেক্ষা করি তোমার অশ্রুজলে।
বিষাক্ত দুর্গন্ধ করে অবরুদ্ধ নিরীহ প্রাণের নিঃশ্বাস,
দহন নেভাতে আসবে এই রাতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
তাই লাশের স্তূপে শুয়ে এখনো আছি আশা নিয়ে,
একদিন হবো স্বাধীন আর কাটবে না দিন ভয়ে।

ওদের অত্যাচারে জনতা মরে, আরো কত মরবে?
ঘরে ধর্ষিত বোন এনেছে শ্রাবণ, শুধু রক্ত ঝরবে।
ডেকেছি যুদ্ধ হয়ে ক্রুদ্ধ রুদ্র রূপে এসো রণে,
হাতে তরবারি বিধ্বস্ত নগরী রোষে উঠি রক্তপানে।
আজ জাগ্রত জনতা হয়েছে একতা করতে সংগ্রাম,
চেয়েছে বিচার ডেকেছে তোমার রক্তে লেখ নাম।

তবে হে বীর ভ্রাতা, তোমার কেন এত নীরবতা?
ঘুমিয়ে মুখ লুকিয়ে দেখা যায়না রক্তাক্ত কবিতা।
কবি কেঁদে যায় দূতাসভায় পাঙ্চালীর বস্ত্র হরণে,
নারীকে করেছে নর্তকী বিনোদন নিচ্ছে রাতে-দিনে।
কারো গালে মদ্য ঢালে, কেউ নেয় কোলে তুলে,
নেশার ঘরে জড়িয়ে ধরে,উন্মত্ত হয় সকলে।

শত্রু রাজা কি দেবে সাজা? জঙ্ঘা চিরে নাও প্রাণ,
দেব না পালাতে ভীম রণ ভূমিতে রক্ত করবো পান।
শ্লোগান আমার জাগো এবার মারতে হবে ওদের,
দুর্লভ রাত ঘাতকের আঘাত ভুলতে হবে আমাদের।
মৃত্যুর ঘ্রাণ বিচলিত প্রাণ করে ভিতু-কাপুরুষের,
ন্যায়ের জন্য বিশ্ব কাঁপানো পরম কর্তব্য বীরদের।

রক্তাক্ত ভূমি হও সংগ্রামী আনতে হবে স্বাধীনতা,
গণতন্ত্র দেশে ভয় কিসে? আজ নয় কোন নীরবতা।
ভয়-ভিতু প্রাণ চায় পরিত্রাণ  বারে-বারে হয় ক্ষয়,
যত শুনি শত্রুর সুর চিন্তিত বিদুর সম্মুখে সব লয়।
কুরুবংশ হবে ধ্বংস, কে করে কাকে আর রক্ষা!
পঞ্চ-পাণ্ডব তুলেছে তাণ্ডব, পাবে মূর্খরা শিক্ষা।

যদিও রাজ্যহারা এখন আমরা ধরেছে টুঁটি চেপে,
মরছে কত হচ্ছি দলিত উড়ছে পতাকা মৃত স্তূপে।
ওরা মনের সুখে আহত বুকে চুষছে মায়ের রক্ত,
অভুক্ত রাত্রি গিলছে অস্থি আর কত হবো অন্ত?
শ্রান্ত মন জাগুক এখন শেষ হয়েছে কলমের কালি,
বেঁচে থাক নির্বাক রক্তাক্ত কবিতায় কবির অঞ্জলি।


রচনাকাল ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ
১১ আশ্বিন ১৪২৬ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।