রক্তে লেখা চিঠি
✍- উজ্জ্বল সরদার আর্য
হে বীর!আজ হতে শুরু হলো যুদ্ধ
জনশূন্য নগরী অবরোধে-অবরুদ্ধ
হচ্ছি নির্বংশ-নিষ্প্রাণ,
বোমা বিস্ফারণ আর বন্দুকের গুলি
কেড়েছে প্রাণ পুতলি
রক্ত স্রোতে আমায় ভাসালি
করেছি মহাপ্রস্থান।
স্তম্ভ নির্মাণ থেমেছে ওরে
স্বাধীন পতাকা উড়বে না রে
স্বদেশে শত্রু পাহারায়,
রাজ্যের অলিগলি
আমরা ভুলি-
ভয়ে কাঁপি চুপিচুপি নিলাম বিদায়।
আজ কেউ আছে অনাহারে
কেউ অকালে রোগে মরে,
বস্ত্র হীনা ধর্ষিতা নারী
আছে পড়ে পথে!
কারো বুকে লেগেছে গুলি
ক্ষত আমার মাথার খুলি
জেলে বন্দি-বন্ধুরা
ঘুমালো প্রহর-প্রভাতে।
ওরা রক্তপিপাসু, মাংসাশী পশু,
কত দেবো প্রাণ জোগান!
নিদারুণ ভাগ্য পরিহাস
অন্তরে ত্রাস,
রাহু গ্রাসে করি মরণ গান।
গন্ধহীন ফুল করেছে ভুল
হলো অকাল সঙ্গী কাল,
জনম ব্যর্থ আমি অপদার্থ
ভয়ে ঝরি শুধু রূপে উজ্জ্বল।
তাই পদাঘাত পাই
মায়ের বুকে,
বীর-বাঁচে
ভুলেছে আমাকে।
শোকে পথ হারালো কবি
ডুবেছে রবি-
আঁধারে করি অশ্রুপাত,
আজ কোথায় আমার নির্ভীক ভ্রাতা?
পথে-পদ পিষ্ট, ক্ষত-রক্তাক্ত কবিতা
হচ্ছে কুপোকাত।
তাই নির্ভীক প্রাণে এসো স্বাধীন শ্লোগানে
পথে নেমে হবে পথ চেনা,
দল বদ্ধ হয়ে সম্মুখে যাও এগিয়ে
যুদ্ধের বাজুক বাজনা।
হে বন্ধু! অন্তরের অবরুদ্ধ দুয়ার
খোলো এবার-
ছুটে চলো নব যাত্রায়,
দুর্বল প্রাণ চেয়েছে পরিত্রাণ
পড়ে আছি পথের ধূলায়।
তাই রাজ্যহারা হয়েছি
শত্রু'র চরণ রক্তে রাঙিয়েছি
ওরা ধরেছে টুঁটি চেপে,
আর কত মরবো লুকিয়ে বাঁচবো
উড়ছে ওদের পতাকা মৃত্যু দেহের স্তূপে-স্তূপে।
ওরা জ্বেলেছে আগুন হচ্ছে দেহ-দাহন
মারুতে মুখরিত ধোয়া,
নেভেনা শ্মশান ভুলেছি জয় গান
নেমেছে দুঃখীনির দুঃখ ছায়া।
ছিনিয়ে নিয়েছে খাদ্য, বস্ত্র,
চুষেছে 'মায়ের রক্ত,
ক্ষতবিক্ষত মা এখন অরক্ষিত
কাটে না দুর্লভ এই নক্ত।
তবে কি হবে এর শেষ পরিণাম
হও নির্ভীক উদ-উদ্দাম
রাঙাতে হবে রক্তে ভূমি,
শত্রু দমনে হও সংগ্রামী-
শংকর সম বীর!
এসেছি রণক্ষেত্রে পত্র লিখেছি রক্তে
এসো তুমি জয়যাত্রায় উঠুক বেজে হাম্বির।
রচনাকাল -১৮ মার্চ ২০২০ খ্রিস্টাব্দ
বাংলা -৫ফাল্গুন ১৪২৬ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।