উষার অর্ষমা আজ মদ্য মাতাল,
চতুর্দিক দহনে পুড়ছে,
অকূল লহরী'তে উত্তাল।
পুড়ে হচ্ছে আজ সব ভস্ম,
মোর যা ছিল,
মহাকালের মুখে করেছি উস্বর্গ।
ভয়ে তাই স্বদেশ কম্পিত,
নিবীর্য - জনতা,
মহাকাল শ্রান্তিরহিত ।
এখন,
কে কারে আর বাঁচায়?
পুলিন ভেঙে সলিল
সকলকে ভেলা বানিয়ে ভাসায়,
এ'মহাকালের সম্মুখে দাঁড়িয়ে
দ্বন্দ্ব করার মত
কোন বীর বিপ্লবীর হিম্মৎ যে নেই,
দেহান্তের জম দুয়ারে দাঁড়িয়ে ডাকে আমায়।
নীলিমার নীল গেছে আজ শরে,
মহাকালের ভৈরবী ছায়া
স্বদেশকে রেখেছে ঘিরে।
আবাদ্ধ তাই নিবীর্য জনতা,
অহর্নিশি অনাহারে
দেহান্ত হচ্ছে হাজার চিত্রাঙ্গদা।
এখন,
বভ্রুবাহনের মতো সন্তানের
কে দেবে জন্ম,
স্বদেশ দিন দিন হচ্ছে জনশূন্য ।
পাপিষ্ঠ অত্যাচারী শকুনি, দুর্যোধন,
দ্বন্দ্ব করতে ছল করছে,
রাজ্যের সকল পথ অবরুদ্ধ এখন।
অভিমন্যু হারা অর্জুন ,
লুণ্ঠিত,
অশ্রুপাতে ক্ষিতি ক্ষরিত,
পুত্র হারা অবনী কাঁপানো ক্রন্দন দেখুন।
কাজল হারাবার ভয়ে পাঞ্চালী
সকল দুঃখ নিজ হৃদয়ে করে বিলীন,
চেয়েছিল থাকতে সে স্বাধীন,
সকল আত্মিয়-সজন সাথে নিয়ে
সে তো বাঁচতে চেয়েছিল ,
কিন্তু,
মহাকাল বারে বারে অশ্রুপাত করিয়ে
কাজল ঝরিয়ে দিল,
আজ স্বদেশ হারা হয়েছে প্রবাসী পরাধীন।
এভাবে চলবে আর কতদিন?
নাগিনীর বিশে দেহান্ত হয়ে,
হচ্ছে নিবীর্য জনতা তুহিন।
তোরণ মূলে দাঁড়িয়ে মহাকাল ,
ধর্মের নামে-করেছে অধর্ম,
জম হয়ে সকলকে দেখাচ্ছে পরকাল।
পাপীদের সাথে মিশে
ভুলেগেছে ধর্মের নিয়ম নিতি,
বস্তুহীন হলো সতী।
সাবিত্রীর অভিশাপে
অবগুণ্ঠনে মুখ ঢেকেছেঅবনী,
পাপীদের দণ্ড দিতে,
এসে গেছে মাধব
রণক্ষেত্রে অর্জুনের সারথি হতে,
সে'তো সর্ব শ্রেষ্ঠা -সকলের নয়নের মনি।
শকুনি,দুর্যোধন,
আছে তারা অন্তরালে লুকিয়ে,
বড়ো বড়ো মাহারতিদের
দ্বন্দ্বে দহন জ্বালাতে বলছে,
পুষেছে তাদের ছলনা কৌশলে।
অন্যায়, অত্যাচারের অবশেষে,
পঞ্চপাণ্ডব নিজেদের উস্বর্গ করলো
স্বদেশকে ভালোবেসে।
পাপীদের দিতে চায় তারা আজ দণ্ড,
শিখণ্ডী পুরুষ হলো ,
প্রাচীন শক্র নিধন হলো,
দুঃশাষোনের বুকচিরে,
লোহিত রক্ত পান করে,
পাঞ্চালীর কেশ ধৌত করে,
পাপীদের দেহকে করা হলো খণ্ড খণ্ড।
//
উজ্জ্বল সরদার
দাকোপ খুলনা