অন্তর্ধান
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
মা,মা-গো,তুমি কেন গেলে চলে
আমায় একা ফেলে?
জানি, বড্ড অভিমানী তুমি
তবে আজ আমায় নাও গো কোলে তুলে।
মা,মা-গো, তুমি কেন গেলে চলে ---
তোমার জন্য মনটা আমার বড্ড-ব্যাকুল,
ফুল ফোটে না বনে’ বিরহে শুধু ঝরে বকুল-
তুমি কবে আসবে গো ফিরে?
বসে আছি পথ চেয়ে অনন্তদিন
অশ্রুজলে স্মৃতিরা হয় রঙিন
শুধু একটিবার দাও দেখা আমারে।
এতই যদি যাওয়ার ছিল
সঙ্গে কেন নিলে না?
কি করে আজ থাকবো বলো
মন যে মানে না,
আমি যেতে চাই তোমার সাথে!
ওই অন্তহীন পথের সঙ্গী হবো
আঁচল ছায়ায় ঘুমিয়ে যাবো
তুমি ফিরে এসো এই প্রভাতের রক্তিম রথে।
কত দিবস-রজনী নীরবে চলে যায়
কত নিশুতি নিশির বাঁশি থেমে যায়
তবু-তুমি এলেনা গো ফিরে,
পথ ভোলা পথিকের কান্না
তুমি কি শুনতে পাওনা
কত স্মৃতি মনে পড়ে বারে-বারে।
আজ তোমার সন্ধানে আমার যায় বেলা
আছি একলা,
রিক্ত কুঞ্জ এসেছি ফেলে!
স্মৃতি ঘন বুকে রেখেছি তোমাকে
পদচিহ্ন রাঙাই অশ্রুজলে।
ওগো মা এসো ফিরে এবারে
বলো মধুমাখা গল্পকথা,
তোমার গলে দেবো মালা
আছে গাঁথা -
মুখ ঢেকোনা অবগুণ্ঠনে,
শোকাহত মন শ্রাবণ আনে নয়নে-
যমুনায় লহরী তোলে!
মা,মা-গো, তুমি কেন গেলে চলে -
আমায় একা ফেলে?
কতদিন তোমার কোলে মাথা রেখে
হইনা নিস্তব্ধ-নিদ্রায়,
অন্তরে শূন্যতা তোমায় ঘিরে
সকলে দেয় শুধু মিথ্যা অভয়।
আমি থাকতে চাই না আর তোমায় ছেড়ে
আছি নির্জনে ধুলা মাখা দেহে পড়ে,
অন্তবিহীন যাত্রী ওগো তুমি!
শ্মশানের দহনে-দগ্ধ ধোয়ায় দৃষ্টি অবরুদ্ধ
ভস্ম উড়ছে বাতাসে গেলে গঙ্গায় মিশে
বেদনায় কেঁদে যাই শুধু আমি।
আজ কত স্মৃতি হৃদয়ে যে করে খেলা
তোমার সন্ধানে যায় বেলা,
বেলাভূমির বাঁধ ভেঙে
সলিলে ভাসিয়েছি চিঠির ভেলা কত!
তবুও কোন খবর এলো না পাখির ভাষায় ভেসে
হয়েছো অন্তর্ধান-- লুকিয়েছ অন্তরাল আবাসে,
শ্রদ্ধায় আমি মৌনব্রত।
আজ প্রদীপ জ্বালাই আশায়-আশায়
প্রণাম করি মা তোমার চরণে,
ঝরা ফুলে অশ্রু জলে ধূপ জ্বেলে করি পূজা
দিনভর থাকি তোমার স্মরণে-
নিথর নদীর কূলে!
মা,মা-গো, তুমি কেন গেলে চলে -
আমায় একা ফেলে?
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল, ১৯ মে ২০০৯ সাল,
বাংলা-৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৬ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।
আমার ১৩ বছর বয়সে লেখা প্রথম কবিতা..