মায়াবতী
    ✍️-উজ্জ্বল সরদার আর্য

   তোমার অপলকে চেয়ে থাকা গম্ভীর চোখে
   সূর্য ডোবে রোজ,
         গোধূলির রং ঝরে পড়ে সমুদ্রের জলে।
   দীপ হাতে বেরিয়ে আসে দেবদাসী,
            ব্লাউজ খোলা সুঠাম বক্ষে ঢেউ ওঠে
            দক্ষিণা হাওয়ায়।
   শীতল স্বচ্ছ সলিলে গা ভাসিয়ে গঙ্গায় ডুব দিয়ে
   সন্ধ্যা ছুঁয়ে উঠে আসে সে,
   ভেজা শরীরে তুলি টেনে অমরত্ব খোঁজে শিল্পী।
   এ-যেন কেবল চিত্র নয়, স্বচ্ছ শাড়ির আড়ালে
   হেসে ওঠা যৌবনা, অচেনা রাজ্যের কোন এক
   তিলোত্তমা।

   আমিও কৌমুদী রাতে পদচিহ্ন ধরে কস্তূরী গন্ধ
   মাখা ইতিহাস খুঁজি,
                তারুণ্যের কবি হয়ে তার পিছু পিছু।  
   গোলাপী ঠোঁট ছুঁয়ে রোমান্টিক আদুরে সংলাপ
   লিখবো বলে, এত প্রাচীন কাব্যে দিচ্ছি উঁকিঝুঁকি।
   পিছু ফিরে মুচকি হাসে অধরা কবিতা,
   অন্তরাল থেকে ডাক দেয়--- মায়ায় ছুঁয়ে-ছুঁয়ে
   পালিয়ে যায়, ভগবানে সঁপে দেওয়া বন্দি আত্মা।

   স্বর্গের প্রাচীর টপ্‌কে সেদিন প্রথম দেখেছি,
      এ-উর্বশীর নৃত্য কোটি দেবতার নজর এড়িয়ে।
   দেখেছি, দেবরাজের চোখে কামনার তীব্র পিপাসা।
   গহীন রাতে দেবদূত খবর নিয়ে আসে, সেজে ওঠা
   নারীত্বের উষ্ণতা খোরাক হয় ক্ষুধার্ত দেবতার।
   পুরুষত্বের গরলে ছাপিয়ে ওঠে উপত্যকা,
           ক্ষতবিক্ষত কিনারা ভেঙে পড়ে অবহেলায়।
    
    সেদিন শাসিত শাস্ত্রের গায়ে আগুন লাগিয়ে
    মুখোশের আড়ালে সামাজিক দম্ভের
    করেছি উন্মোচন।
    মানব দেবতার বর্ণ দেয়াল ভেঙে প্রেমিক পূজারী
    হয়ে উঠেছি নারীত্ব পূজায়।
    এখন প্রকৃতির বুকে জন্মানো প্রেমে হয়ে উঠেছি
    আমি তার অংশ,
    সে হয়েছে বেদব্যাস বর্ণিত কাব্যের মুক্ত কবিতা,
    আমার মায়াবতী।

রচনাকাল, ২০ জুন ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ,
৫ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার,
দাকোপ খুলনা,বাংলাদেশ।