জাগো অর্জুন
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
(পঞ্চম সর্গ)
হে মাধব, আপনার রূপ-কিরূপ?
দেখতে চাই আমি!
সাংখ্যযোগে জেনেছি আত্মা,
পরমাত্মা তুমি।
কেবল-কিছু সময়ের জন্য বসবাস করি
নশ্বর-শরীরে,
আত্মার হয়না কখনো মৃত্যু
থাকতে হবে পরমাত্মাকে ঘিরে।
এবং কর্মযোগে জেনেছি ফলের আশা
করতে হবে ত্যাগ,
যে কেবল কর্ম করে সে সফলতা-শান্তি
খুঁজে পায় অনুরাগ।
জ্ঞানযোগে তোমায় চিনেছি,
ভক্তিযোগে হয়েছি সমর্পণ!
কিন্তু মাধব,বলেছিলেন আপনি
সরাতে রজনী
তবেই নাকি হবে আপনার দর্শন।
তবু আমি এখানে কেবল
মানুষ দেখি,
তাই দয়া করে দেখান এবারে
আপনার বাস্তবিক রূপ কে হৃদয়ে আঁকি।
শক্তি, জ্ঞান, তেজ, ঐশ্বর্যময়,
দেখে জুড়ালো হৃদয় -
করি প্রণাম!
পরমাত্মাকে প্রত্যক্ষ দর্শন
করলাম এখন
সমস্ত সন্ধেয়ের হলো অবসান
জপেছি অন্তরে তোমার নাম।
হে অর্জুন, সাংখ্যযোগ থেকে কর্ম
কর্মযোগ থেকে জ্ঞান-ধর্ম
হৃদয়ে হয় প্রবেশ!
জ্ঞানযোগ থেকে ভক্তি
ভক্তিযোগে আমাতে করো মনোনিবেশ।
আমার এই বিশ্বরূপ দর্শন
বাস্তবিক জ্ঞান অর্জন,
যা বিশ্বের সমস্ত জ্ঞান ও বিজ্ঞানের
মুল আঁধার মনে রেখো সর্বক্ষণ।
এই জ্ঞান করে মুক্তি প্রদান
ছেদন করে সকল বন্ধন,
যা সহজে প্রাপ্ত হয় না
তা প্রাপ্ত করলে এখন।
আমি এই ভূমণ্ডলের কোনে-কোনে
চিন্ময় শাশ্বত অমর জীবনে
বসবাস করি,
আর সূর্য, চন্দ্র,নক্ষত্র গ্রহরাজি সমস্ত
আমার অন্তস্তলে ভাসিয়েছে তরি।
আমি সত্য, আমি সম্পূর্ণ,
আর আমিই অনন্য-
অমর জীব;
আর আমিই শিব।
অক্ষরে আকার আমি,
বেদ মধ্য সামবেদ; দেব মধ্য ইন্দ্রিয়;
আমিই অন্তর্যামী।
বসুদের মাঝে অগ্নি
পর্বতের মধ্যে সুমেরু, আমি ঘুরনি।
ধ্বনিতে হুংকার,খোলো হৃদয় দ্বার,
যজ্ঞের মধ্য যব!
বুদ্ধিতে স্মৃতি, মেধা, ধৃতি
আমি ক্ষমা, কৃতী -
আর আমিই থামিয়ে দেই হিংসার কলরব।
আমি আদিত্যদের মধ্যে বিষ্ণু,
জ্যোতিষ্কদের মধ্যে আমি দিবাবসু।
নক্ষত্রদের মধ্যে আমি চন্দ্র,
দেবতার মধ্যে আমি ইন্দ্র।
সমস্ত ইন্দ্রের মধ্যে আমি মন,
প্রাণীদের মধ্যে আমি চেতন।
রুদ্রের মধ্য সংকর,
আর আমি করি সংহার।
জলাসার মধ্যে আমি সমুদ্র,
তোমরা তটিনী অতি -ক্ষুদ্র।
ঋতুর মধ্যে আমি বসন্ত,
আমি কখনো ক্ষিপ্ত, কখনো শান্ত।
আমি'ই বিশ্ব কারিগর জগদীশ্বর,
হে পার্থ আমার আদেশে চলে সকলে
তুমি যুদ্ধ করো,যুদ্ধ করো এবার।
(সমাপ্ত)
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল,২৯ মে ২০২০ সাল,
বাংলা ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, (শুক্রবার)
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।