ফিরিয়ে দিও না আর এই বেলা শেষে
    ✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য

        ফুল ফোঁটা বসন্ত বনে এসেছি ওগো
        তোমার সন্ধানে,
        আমার আকুল নয়নে দাও গো দেখা!
        প্রেম হারানো বিরহ-বেদনায় অন্তর
        জ্বলে যায়,
        গহীন রাতে লাগে নিঃসঙ্গ একা।
        তাই থেকো না আর অন্তরালে জাগাও
        প্রেম-প্রাণ কমলে
        আজ এঁকেছি অশ্রু জলে জলছবি,
        আমি বেলা শেষের সুরে ডেকেছি
        তোমারে, তুমি এসো হে ---
        নীলপদ্মে বসিয়ে তারে লিখবে কবিতা
        কবি,
        দেবো অনন্ত-অন্তরে অঞ্জলি
        পূজারীর আত্মনিবেদন করো হে গ্রহণ
        স্মৃতিচারণে অমর গীতাঞ্জলী।

         হে-প্রিয়তমা, গড়েছি তোমার প্রতিমা
         মন-মন্দিরে হই নত নমস্কারে -
         দিন রাত প্রতিক্ষণ!
         প্রতিক্ষমান থাকি নাম ধরে ডাকি
         আজ বাতাসে শুনি তোমার নূপুর গুঞ্জন।
         তাই চঞ্চলা উতলা মনে ছুটেছি
         আলেয়ার-আলোয় পথ ভুলেছি
         হারিয়েছি আমি তারে, রাতের অন্ধকারে-
         আছি নির্জনে
         জ্বালিয়ে প্রাণে প্রেমের প্রদীপ শিখা
         ওগো দাও দেখা আজ এই করুণ দিনে ।
         এখানে পুষ্প ঝরে পদচিহ্নে অবিরত
         দলিত দেহ হলো ক্ষত নত নয়নে
         যায় চলে বেলা, জীবন কেটেছে একলা-
         আছি অপেক্ষায়!
         তুমি চম্পা ফুটলে না বনে এই বসন্ত ক্ষণে
         ভরেছে বুক বিরহ বেদনায়।

         হে প্রেয়সী, উচ্চ অভিলাষী, অনন্ত যৌবনা
         উর্বশী তুমি,
         তোমার রূপ-লাবণ্য সেতো অনন্য
         ধন্য ধরিত্রী, ধন্য আমি-
         আমার ঐশ্বর্যবতী
         তোমারে করি আরতি সকাল-সন্ধ্যা বেলা
         পুলকিত প্রাণে করছো খেলা
         দেখাও শুধু ছলাকলা-- মোহিনী শক্তি।
         তবে কি করে ভুলবো বলো তারে
         ভালোবাসি জনম-জনম ধরে,
         তোমায় ঘিরে ঝরে কত অশ্রুজল
         সকাল-বিকাল-অনন্তকাল -
         নিশুতি-নিশিতে কত কল্পনাতে!
         কেড়েছ ঘুম ঝুমঝুম ঝর্ণা ধারায়
         নিয়েছ প্রাণ,প্রাণ-পিপাসায়-
         আসায়-আশায় ছুটি আমি মধ্য রাতে।
         আজ আনন্দিত পৃথিবী তোমার সুখ
         সঙ্গীতে আমি ডুবেছি বিরহ বেদনাতে
         ক্ষত বুকে শুধু তুমি,
         উৎকণ্ঠিত থাকি মেলে দিয়ে আঁখি
         হয়ে উদ্দাম প্রেমী।

          হে-তিলোত্তমা, তুমি নিরুপমা,অনন্ত-
          মহিমাময় রূপবতী,হেরেছে রুক্মিনী-রতি
          প্রশস্ত স্মিত ফোটে পলকে-পলকে
          কত গুণী জন চেয়েছে দান
          আমি শুধু দেখি দূরে দাঁড়িয়ে তোমাকে।
          তোমার ওই প্রেম পাবার অভিলাষে
          ভরেছে বুক বিরহ বিষে
          নিশ্বাস ফুরিয়ে আসে দিনেদিনে,
          মিনতি করি পড়ে চরণে-
          হও ওগো আমার
          ফিরিয়ে দিও না আর এই বেলা শেষে
          যাবো চলে কাল যাত্রায় উল্লাসে
          সময় হয়েছে বিদায় নেবার।

রচনাকাল-১৩ জুন ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ,
             ৩০  জ্যৈষ্ঠ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ,
              দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।