দুর্গতিনাশিনী
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
দীর্ঘ বর্ষ পরে আসিস না আমার মন্দিরে
আমি আর তোদের জননী নই,
অনেক দেখেছি ভক্তি পেয়েছি প্রীতি
এবার ন্যায় বিচার হবে শীঘ্রই।
শিল্পী কল্পনায় হৃদয়ে এঁকেছে আমায়
বানিয়েছে মধুর-মূর্তি কত
ভক্ত চরণে হয় নত
অধর্মী খোঁজে আসুরিক শক্তি,
আমি নারী’ নই তোদের মনোরঞ্জনকারী
আজ নাশ হবে সকল দুর্গতি।
ওরা আসে ভক্ত সেজে রং তামাশায় মজে
দেখতে আমার দেহ-মূর্তি,
‘বলে আহা কি সুন্দরী যেন মোহিনী নারী’
পেতে চায় সমগ্র নারীর প্রীতি।
কামনায় হয়েছে পথভ্রষ্ট করছে পদপিষ্ট
করছে নারীকে অত্যাচার,
আমি প্রকৃতি-মহামায়া-তেজস্বী-শক্তি
তোরা আমাকেই করছিস সংহার।
ওরে মূর্খ আমি কোন মন্দিরের পুতলি নই
এই বিশ্ব জগত জুড়ে রই
লক্ষ-কটি জীবের রূপ আমি,
তোরা লালসায় আমাকে করছিস ক্ষয়
হয়েছে রক্তে-রক্তাক্ত ভূমি।
এখন আমি সেই-যে কাঁদে পথে-পথে
অনাহারে,
অকালে মরে অত্যাচারে-
দুঃখিনী নারীর প্রাণ!
যাকে রাতের অন্ধকারে জোর করে
কেড়ে নিয়েছিস যৌবন।
করেছিস হত্যা মেরেছিস মমতা
আজ অন্তর আমার ক্রুদ্ধ,
জ্ঞানহীন জীবন হিংস্র সর্বক্ষণ
রেখেছে নারীকে কারারুদ্ধ।
করেছে দাসী, নর্তকী, মনোরঞ্জনকারী,
ধর্ষিতা-বেশ্যা
এখন দেখি শুধু সৃষ্টির দুর্দশা-
সমাজ-সংস্কার করতে হবে এবার
পেয়েছে আমার রক্ত পিপাসা।
আজ থেকে আমি তোদের জননী নই
নই আর প্রেমী-পত্নী-পুত্রী-দেবী,
রুদ্রাণী রূপ দেখবি এবার করবো সংহার
অসুর তোরা কোথায় পালাবি?
আমি মহাকাল আর আমিই মহাকালী
সমস্ত নারীর অন্তর-অঞ্জলি,
দুর্গা-দুর্গতিনাশিনী আমি'ই ভবানী
অকর্ম-অধর্মে আজ আমায় জাগালি।
রচনাকাল, ২৩ অক্টোবর ২০২০ খ্রিস্টাব্দ
বাংলা- ৬ কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।